বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের কার্যালয় পরিদর্শন শেষে ডিবি ও সিটিটিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আজ সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর ৩৬, মিন্টো রোডে অবস্থিত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি ও সিটিটিসি কার্যালয় পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, বিপিএম এবং ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী, এনডিসি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তা স্বত্বেও আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। আইনের বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করা যাবে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনা করে সতর্কতার সাথে ও ধৈর্য ধরে দায়িত্ব পালন করার এবং মানুষের প্রত্যাশা পূরণে আন্তরিক হওয়ার ও সর্বদা সচেষ্ট থাকার তাগিদ দেন।
তিনি বলেন, বাহিনীর দুই-এক জনের অপকর্মের জন্য পুরো বাহিনীর সবাইকে সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়। তাই নিজেদের ইমেজ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত থাকতে হবে। পুলিশের সবাইকে অবশ্যই আইন ভালোভাবে জানতে হবে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে পুলিশের নিয়োগ, বদলি ইত্যাদি স্বচ্ছতার সাথে হচ্ছে। নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের তদবির ও আর্থিক সংশ্লিষ্টতার কোনো অবকাশ নেই। পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্য শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কাজে জড়িত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি ডিবি ও সিটিটিসির বর্তমান কার্যক্রম সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং তাদের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার পরামর্শ দেন।
পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভা শেষে অনুষ্ঠিত প্রেসব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ডিবির নির্ধারিত পোশাক ছাড়া ডিবি এখন থেকে সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেফতার করবে না। ডিবি আইনের বাইরে যাবে না। আইনের বাইরে গিয়ে কাউকে গ্রেফতার করবে না। ডিবিতে আয়নাঘর বা ভাতের হোটেল বলে কিছু থাকবে না। ডিবির প্রতিটি কার্যক্রমে স্বচ্ছতা থাকবে।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেকোনো ব্যক্তির দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপনারা সংবাদ প্রচার করবেন ও সত্য ঘটনা তুলে ধরবেন। মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকবেন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্ডার সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সরকার উভয়ের সাথেই আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। আমাদের বর্ডার যেন শান্ত থাকে সেটার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ডিবি কম্পাউন্ডে সিটিটিসির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, কে-৯ টিমসহ অন্যান্য টিমের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মো. মাসুদ করিমসহ ডিবি ও সিটিটিসির বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।