শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন
লক্ষ্মীপুর জেলার চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার প্রধান আসামী রেশমা আক্তার ’কে চট্টগ্রাম মহনগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি: ভুক্তভোগী ভিকটিম নিহত আনোয়ার হোসেন লক্ষ্মীপুর জেলার সদর থানাধীন লাহারকান্দি ইউপিস্থ কুতুবপুর গ্রামের বাসিন্দা। পারিবারিক জমিজমা ভাগাভাগি নিয়ে নিহতের পরিবার এবং তার ভাইয়ের পরিবারের মধ্যে পূর্ব হতে বিরোধ চলে আসছিল। উক্ত জমিজমার বিষয় নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয় কিন্তু নিহত ভিকটিমের ভাইয়ের পরিবার উক্ত সালিশ না মেনে প্রায় সময়ই নিহতের পরিবারকে প্রাণে হত্যা করার হুমকি দিয়ে আসছিল।
উক্ত হত্যার ঘটনায় বাদী এবং বিবাদী একই পরিবারের সদস্য হওয়ায় তারা একই রাস্তা দিয়ে চলা করত। ঘটনার দিন বিবাদী মাহমুদ রোমান একটি সিএনজি যোগে রাস্তা দিয়ে বাড়ি আসার সময় ভুক্তভোগী ভিকটিম নিহত আনোয়ার হোসেন এর ছেলে বেল্লাল হোসেনকে দেখতে পেয়ে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে। তখন বেল্লাল হোসেন মাহমুদ রোমানকে গালমন্দ না করার জন্য অনুরোধ করেন কিন্তু এতে মাহমুদ রোমান তার উপর ক্ষীপ্ত হয়ে উঠে। একপর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বিবাদীর পরিবারের সবাই লোহার রড, ইট, লাঠি এবং দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পরস্পর যোগসাজসে বেল্লাল হোসেন এর শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যপুরি আঘাত করে এতে বেল্লাল হোসেন রক্তাক্ত ও গুরুত্বর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে এবং চিৎকার করতে থাকে।
এসময় ছেলের চিৎকার শুনে বাবা আনোয়ার হোসেন ঘটনা স্থলে পৌছে ছেলেকে রক্তাক্ত ও গুরুত্বর জখম অবস্থায় দেখে বিবাদীদেরকে মারাধোর করতে বাধা দেয়। তখন ধৃত আসামী রেশমা আক্তার ইট দিয়ে আনোয়ার হোসেনের বুকের উপর উপর্যপুরি আঘাত করলে সেও রক্তাক্ত ও গুরুত্বর জখম অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পরে তখন বিবাদীরা সবাই ঘটনাস্থান থেকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে স্থানীর লোকের সহযোগীতায় রক্তাক্ত ও গুরুত্বর জখম অবস্থায় আনোয়ার হোসেন এবং তার ছেলে বেল্লাল হোসেন’কে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনোয়ার হোসেনের অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। গত ২৩ জুলাই ২০২৩ইং তারিখ আনোয়ার হোসেন’কে মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলে পথিমধ্যে বুকের ব্যাথায় ছটপট করতে থাকলে তাৎক্ষণিক লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গত ২৪ জুলাই ২০২৩ইং তারিখ আনোয়ার হোসেন’কে মৃত ঘোষনা করেন।
এই ঘটনায় গত ২৫ জুলাই ২০২৩ইং তারিখ নিহতের সন্তান বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর জেলার লক্ষ্মীপুর মডেল থানায় ০৫ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-৫৬ তারিখ ২৫ জুলাই ২০২৩ইং, ধার-১৪৩/৪৪৭/৩২৩/ ৩২৫/ ৩০৭/৩০২/৩৭৯ পেনাল কোড ১৮৬০।
এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, উক্ত মামলার এজাহারনামীয় অন্যতম পলাতক আসামী রেশমা আক্তার (২২) আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে লক্ষ্মীপুর থেকে এসে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় অবস্থান করছে।
উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৫ আগষ্ট ২০২৩ ইং তারিখ র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত মামলার এজাহারনামীয় অন্যতম প্রধান পলাতক আসামী রেশমা আক্তার (২২), পিতা- এনায়েত উল্ল্যাহ, সাং- কুতুবপুর, থানা- সদর, জেলা- লক্ষ্মীপুর’কে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামী অকপটে স্বীকার করে যে, সে উল্লেখিত ভুক্তভোগী ভিকটিম নিহত আনোয়ার হোসেন হত্যার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলো।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে