শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৩ অপরাহ্ন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, নিজস্ব অর্থায়নে বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর সফল নির্মাণ দেশের উন্নয়ন কর্মসূচি পরিচালনার জন্য বাংলাদেশকে অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষের একটা ধারণা বা মানসিকতা আছে যে আমরা অন্যের টাকা ছাড়া কিছু করতে পারি না। আমাদের মানসিকতার এই দৈনতাটা ছিল।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ তাঁর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন।
যারা পদ্মা সেতু নিয়ে সমালোচনামূলক নানা কথা বলেছেন, সেসবের কিছু উদ্ধৃতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী তাদের সেই সব বক্তব্যে জন্য অনুতাপ ও অনুশোচনার দায়ভার তাদের কাঁধেই অর্পণ করেন। এখানে তাঁর কারো বিরুদ্ধে কোন কোন অভিযোগ নেই উল্লেখ করে বরং তাদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধন্যবাদ জানাই এই কারণে-কেননা এই ঘটনা ঘটেছিল বলেই আজকে সাহস নিয়ে নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে আজকে বাংলাদেশের সম্মান ফিরে এসেছে। নইলে আমাদের দেশের অনেকেরই একটা মানসিকতা ছিল যে আমরা অন্যের অর্থায়ন ছাড়া কিছুই করতে পারবো না। এই পরনির্ভরশীলতা এবং পরমুখাপেক্ষিতাই আমাদের মাঝে ছিল, একটা দীনতা ছিল।
পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধে বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রচলিত প্রবাদের উল্লেখ করে বলেন, ‘নিজের ভার ভাল না, গোয়ালার ঘির দোষ দিয়ে লাভ কি?’
তিনি বলেন, বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন যে বন্ধ করেছিল সেটাতো আমাদের দেশেরই কিছু মানুষের প্ররোচনায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব ব্যাংক তহবিল প্রত্যাহার করে নেয়ার পরে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু করার মাধ্যমে বাংলাদেশ সেই অচলায়তন ভেঙ্গে বেরিয়ে আসতে পেরেছে, বাংলাদেশ যে পারে সেটা প্রমাণ করতে পেরেছি, এতেই আমি খুশী।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ বা এর কাজের গুণগত মান নিয়ে কোন আপোষ করা হয়নি। এই সেতু নির্মিত হয়েছে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ দিয়ে। পুরো নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২৫ তারিখে আমরা পদ্মাসেতু উদ্বোধন করবো, আমি দেশবাসী সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। কেননা, তাদের সাহসে সাহসী হয়েই নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ করতে পেরেছি।
দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, উৎসব সবাই করবেন কিন্তু প্রত্যেকে একটু ধৈর্য্য ধারণ করবেন এবং নিয়ম মানবেন এবং কোথাও কোন দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখবেন।
তিনি বলেন, যার যার জায়গা থেকে যেমন ভাবে হোক এই উৎসবে সবাই সামিল হবেন-এটা আমাদের মর্যাদার বিষয় যে আমরাও পারি। এটাই আমরা প্রমাণ করেছি কাজেই সেভাবেই সবাই উৎসবে সামিল হবেন।
তিনি এ সময় সকলের মঙ্গল কামনা করে সকলের দোয়া চান বাংলাদেশ যাতে বিশ্বে এভাবেই মাথা উঁচু করে চলতে পারে।
সূত্র : বাসস