বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৮ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি:
উপদেষ্ঠা মন্ডলীর সভাপতি মো: ইসলাম, সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, নির্বাহী সম্পাদক: সেলিম উদ্দিন খান,  বার্তা প্রধান : মোহাম্মদ আসিফ খোন্দকার, আইনবিষয়ক সম্পাদক: অ্যাডভোকেট ইলিয়াস , যোগাযোগ : ০১৬১৬৫৮৮০৮০,০১৮১১৫৮৮০৮০, ঢাকা অফিস: ৪৩, শহীদ নজরুল ইসলাম রোড, চৌধুরী মল (৫ম তলা), টিকাটুলি ১২০৩ ঢাকা, ঢাকা বিভাগ, বাংলাদেশ মেইল: bdprotidinkhabor@gmail.com চট্টগ্রাম অফিস: পিআইবি৭১ টাওয়ার , বড়পুল , চট্টগ্রাম।
সংবাদ শিরোনাম:
শ্রীমঙ্গলে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত শেরপুরে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস-আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালিত নওগাঁর হাঁপানিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় মোটর সাইকেল আরোহী মোস্তফা ও মালেক নামে দুই জনের মৃত্যু বন্যহাতির আক্রমনে বাঁশখালীতে বিট কর্মকর্তা আহত লোহাগাড়ায় শিবির নেতার পিতার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক দল জামায়াতের নেতৃত্বে আগামীতে সরকার গঠন করবে: ড.ফয়জুল হক ৭৭তম আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে আইএইচআরসিজি’র আলোচনায় প্রফেসর নসরুল কদির চট্টগ্রাম দক্ষিণ সংরক্ষিত বনভূমিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ: বনকর্মীর ওপর হামলা, আটক ২ নবীনগরে বেগম রোকেয়া দিবসে ‘অদম্য নারী’ ক্যাটাগরিতে ৪ নারীকে সম্মাননা আরপিও সংশোধন: পোস্টাল ব্যালট বাতিল হবে কখন, গণনা কীভাবে

সাতকানিয়ায় আইন বিক্রি হচ্ছে মাসিক চাঁদায়

 

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের ব্যস্ততম অংশ কেরানীহাট। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত হাজার হাজার যানবাহন ছুটে চলে এই স্টেশন দিয়ে। কিন্তু এখন এ পথের যাত্রী ও চালকদের মুখে একটাই অভিযোগ—সড়কে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি, টোকেন বাণিজ্য, আর অবৈধ গাড়ির রমরমা চলাচল।

 

সাতকানিয়ার পরিবহনচালকদের অভিযোগ, কেরানীহাট ট্রাফিক বক্সে ‘টোকেন’ এখন পুলিশেরই এক রকমের পণ্য। প্রতিটি সিএনজি অটোরিকশাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হয়—কেউ ৫০০, কেউ ৭০০, আবার কারও কাছ থেকে আদায় হয় হাজার টাকার বেশি। এরপর চালকদের দেওয়া হয় বিশেষ টোকেন। এই টোকেন দেখালেই আর পুলিশ তাদের থামায় না, মামলা দেয় না, গালাগালও করে না। কিন্তু যাদের কাছে এই টোকেন নেই, তাদের জন্য শুরু হয় হয়রানির পালা।

 

ভুক্তভোগী চালকরা বলছেন, কেরানীহাট ট্রাফিক পুলিশ বক্স এখন যেন এক প্রকার ‘টোকেন সিন্ডিকেট অফিস’। প্রতি গাড়ি থেকে মাসে মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আদায় করা হচ্ছে। যাদের কাছে এই টোকেন নেই, তাদের গাড়ি আটক, মামলা কিংবা হয়রানি—এই তিনের একটিতে পড়তে হয়।

 

গতকাল (৩০ অক্টোবর) ঠাকুরদিঘী এলাকায় প্রায় শতাধিক সিএনজি অটোরিকশা চালক হঠাৎ সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় দশ মিনিট চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সাতকানিয়া থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের দুটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে চালকদের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।

 

অবরোধে অংশ নেওয়া চালক মো. এহছান বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। দিনে ৭০০–৮০০ টাকা রোজগার করি। কিন্তু মাসে মাসে ট্রাফিক পুলিশকে ৫০০–৭০০ টাকা না দিলে গাড়ি চলাতে দেয় না। কখনও চাবি নিয়ে বসে থাকে, কখনও মামলা দেয়। অথচ যারা টোকেন দেয়, তাদের গাড়ি ভিআইপি সার্ভিস পায়।’

 

অন্য এক চালক মো. বাপ্পী বলেন, “এটিএসআই শাহীন ভাই লোহাগাড়া থেকে বদলি হয়ে এসেছেন। এসেই শুরু করেছেন নতুন নিয়ম—‘টোকেন ছাড়া গাড়ি চলবে না’। এখন প্রতিটি গাড়িকে মাসে টাকা দিতে হয়। আমরা না দিলে মামলা খেতে হয়। যে পুলিশ জনগণের সেবা করার কথা, তারা এখন বাণিজ্য করছে।”

 

চালক আবুল হাসেম বলেন, ‘আমার গাড়ি নতুন। সব কাগজ ঠিক থাকার পরও শাহীন আমাকে থামিয়ে টোকেনের কথা জিজ্ঞেস করেন। আমি কীসের টোকেন তা জানতে চাইলে তিনি আমাকে মামলার ভয় দেখান। এরপর ৫০০ টাকা দাবি করেন, এবং টাকা না দিলে গাড়ির চাবি রেখে দেন।’

 

চালকদের মতে, এই টোকেন আসলে একধরনের মাসিক ‘চাঁদা কার্ড’। কেউ না দিলে পুলিশ গাড়ি আটকায়, মামলা দেয়, কিংবা ‘থানায় পাঠানোর’ ভয় দেখায়।

 

তারা বলেন, ‘যারা টোকেন নেয় তারা রাস্তায় সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্তু যাদের টোকেন নাই, তাদের গাড়ি এক মিনিটও দাঁড়াতে দেয় না। এভাবে চললে আইন কোথায়?’

 

একজন চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই টোকেন বাণিজ্যের পেছনে শুধু শাহীন না, আরও কয়েকজন আছে। কিন্তু সবাই জানে, মুখ খুললে বিপদ।

 

কেরানীহাট বাজারের এক ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন এটিএসআই এসে কীভাবে পুরো ট্রাফিক বাণিজ্য চালায়? নিশ্চয়ই উপরমহলের মদদ আছে।

 

অভিযুক্ত এটিএসআই শাহীন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি শুধু অবৈধ ও বিশৃঙ্খল গাড়িগুলোকেই আটক করি। কোনো ধরনের টোকেন বাণিজ্যের সঙ্গে আমি জড়িত নই। লোহাগাড়ায়ও কাগজপত্রবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। ক্ষুব্ধ কেউ কেউ তাই মিথ্যা অভিযোগ করছে।’

 

কেরানীহাট পুলিশ বক্সের ট্রাফিক ইনচার্জ (টিআই) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা কোনো টোকেন বাণিজ্যে জড়িত নই। এটিএসআই শাহীন সদ্য লোহাগাড়া থেকে বদলি হয়ে এসেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি আজই শুনেছি।’

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Design & Development BY ThemeNeed.Com