শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০১ পূর্বাহ্ন
মৌলভীবাজারের চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার চা শিল্পের পাশাপাশি প্রসিদ্ধ মণিপুরি তাঁত শিল্প পরিচিতি রয়েছে সারা দেশে।দুটি উপজেলায় ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় মনিপুরী তাতের শাড়ী, ত্রি-পিছ চাদর, পাঞ্জাবীসহ রকমারী পোষাক। তাদের চাহিদার পাশাপাশি মনিপুরী তাঁত শিল্পের প্রসার এখন দেশ জুড়ে।বিশেষ করে ঈদ ও পূজা পার্বনে এসব পোষাকের চাহিদা বেড়ে যায় দ্বিগুন। কিন্তু বিগত দুই বছর করোনাসহ নানান রকমের দূদর্শায় দিন কেটেছে তাঁত শিল্পদের ।
বর্তমানে করোনার প্রাদুভাব কমে আসায়। ঈদকে সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় পাড় করছেন মণিপুরি তাঁত শিল্পীরা। মণিপুরি এক একটা ঘর মানেই এক একটি তাঁত শিল্পের ছোট কারখানা। বছরের পর বছর ধরে সেই শিল্পের সাথে জড়িত রয়েছেন হাজারও মণিপুরি স¤প্রদায় পরিবার।
জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর, তিলকপুর, মাধবপুর ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার রামনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় মণিপুরি স¤প্রদায়ের বসবাস। এসব এলাকার শতকরা ৯০ ভাগ মনিপুরী মহিলা ও পুরুষেরা তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। তাদের নিপুন হাতের বিভিন্ন নকশাখচিত উৎপাদিত বিভিন্ন প্রকার তাঁত বস্ত্রের পোষাক এখন ঈদ পূজা পার্বনে ফ্যাশন সচেতন মানুষের কাছে ব্যাপক সমাদ্বিত।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে তারা যেমন ব্যস্ত সময় পাড় করছেন তেমনি করোনা মহামারিতে বিগত দুই বছরের ক্ষতি কিছুটা পুষবে বলে আসা করছেন তাঁত শিল্পের সাথে জড়িতরা।করোনাকালীন সময় অনেকে তাদের তাঁত বুনার যন্ত্রপাতি বন্ধ রেখে সংসারের খরচ চালাতে গিয়ে নানান পেশায় জড়িয়ে পড়েছিল। করোনাভাইরাসের প্রাদূর্ভাব কমে আসায় তাঁত শিল্পিরা আবার ফিরেছেন তাদের স্বপেশায়।
শ্রীমঙ্গল রামনগর এলাকার তাঁত শিল্পী সবিতা সিনহা, জয়িতা সিংহ সহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন পেশার মানুষদেরকে বিগত করোনা মহামারির কঠিন সময়ে সরকার থেকে প্রনোদনা দেওয়া হলেও তাদের ভাগ্যে এসব জুটেনি। এদিকে বর্তমানে কাপড় বুনতে গিয়ে সুতা, রংসহ আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদেরকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এদিকে নানা প্রতিকুলতার মাঝেও ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পকে ঠিকিয়ে রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন মনিপুরী তাত শিল্পের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা।
বিশেষ করে বিগত দুটি বছর ধরে করোনা মহামারির কারণে অনেকটা হুমকির মুখে ঠিকে আছে এ শিল্প। এখন পর্যন্ত সরকারি কোন প্রণোদনা কিংবা আর্থিক সহযোগীতা না পাওয়ায় নিজস্ব উদ্যোগে তাত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করেন এ শিল্পের সাথে জড়িত উদ্যোক্তা ভ‚বন সিংহ ।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চলে মণিপুরি তাত শিল্পের প্রসার রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও এর চাহিদা রয়েছে। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারীভাবে তাদের আর্থিক অনুদান প্রদান ও পৃষ্টপোষকতা করার কথা ছিন্তাভাবনা রয়েছে প্রশাসনের।