বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১৬ পূর্বাহ্ন
রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দ্বিতীয় দফার নবম দিনের মত আজ (বৃহস্পতিবার) দেশের ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছে। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে সকাল ১১টায় এ বৈঠকের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। তার সঙ্গে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক সফর রাজ হোসেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, প্রশাসন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং কমিশনের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
আজকের আলোচনায় অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, পূর্ববর্তী বৈঠকে যেসব অমীমাংসিত বিষয় রয়ে গিয়েছিল তা নিয়ে আজ অধিকতর আলোচনা হয়েছে। এছাড়া বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণার নীতিগত কাঠামো নিয়েও গভীর আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন,
“আমরা কি পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে, অন্যদের কি পরিমাণ আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আজকের এ পর্যায়ে এসেছি সেটা আমাদের প্রত্যেকেরই স্মরণ রাখতে হবে। হাজারো মানুষের আত্মত্যাগই যেন হয় আমাদের দিক নির্দেশক।”
তিনি আরও বলেন,
“৫৩ বছরে রাষ্ট্র গঠনের এমন সুযোগ আর আসেনি। অনেক অন্যায়-অত্যাচার ও নিপীড়নের মধ্য দিয়ে এ সুযোগটা আমরা পেয়েছি, এ সুযোগ হেলায় হারানো যাবে না।”
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত অষ্টম বৈঠকে ড. আলী রীয়াজ আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন যে, আলোচনার ইতিবাচক গতি অব্যাহত থাকলে জুলাই মাসের মাঝামাঝি অথবা তৃতীয় সপ্তাহেই ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা সম্ভব হবে।
রাষ্ট্র সংস্কার ও ন্যায়ের ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিক কাঠামো গঠনের এই উদ্যোগ এখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই আলোচনা এবং পরবর্তী সনদ প্রণয়ন আগামী দিনের রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি ঐতিহাসিক ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।