সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪০ অপরাহ্ন
সেমিতে যেতে না পেরে চেলসি কোচের ক্ষোভ: রেফারির সাহসই নেইরূপকথাটা লিখেই ফেলেছিল চেলসি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে স্বপ্নভঙ্গ হলো তাদের। ৩-২ গোলে জিতেও সেমিতে যাওয়া হলো না চেলসির। দুই লেগে মিলিয়ে ৫-৪ গোলে হেরে বিদায় নিতে হলো তাদের।
এমন এক শ্বাসরূদ্ধকর ম্যাচের অবশ্য চেলসি কোচ থমাস টুখেল তার নিজের সমস্ত ক্ষোভ ঝাড়লেন রেফারির ওপর। তিনি মন্তব্য করেন, লা লিগা জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদের মত দলের বিপক্ষে সিদ্ধান্ত দেয়ার মত সাহসই নেই রেফারির।
থমাস টুখেলের শরীর জ্বলে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটেছে ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তির সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলেছেন রেফারি সিমোন মারসিনিয়াক। এরপরই রেফারির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন চেলসি কোচ। তার মন্তব্য, ‘ম্যাচের পর রিয়াল কোচের সঙ্গে রেফারির হাসাহাসি দেখেই বুঝে গিয়েছি, তাদের বিপক্ষে রেফারির সিদ্ধান্ত দেয়ার কোনো সাহস নেই।’
প্রথম লেগে নিজেদের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ৩-১ গোলে হেরে গিয়েছিল চেলসি। ফিরতি লেগে রিয়ালের মাঠে ৩-০ গোলে জিততে পারলে সেমিতে উঠবে চেলসি। সে হিসেবে ছকমতোই যেন এগুচ্ছিল চেলসির সব কিছু। ৮০ মিনিট পর্যন্ত ৩-০ গোলেই এগিয়ে ছিল তারা।
সেমিতে ওঠার জন্য আর মাত্র ১০ মিনিট বাকি। এমন সময়ই গোল করে রিয়ালের আশা জাগিয়ে গোলেন রদ্রিগো। হতাশার মধ্যে পড়ে যায় চেলসি। ৪-৪ গোলে সমতা থাকায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ৯৬তম মিনিটে করিম বেনজেমার গোলে সেমির টিকিট কেটে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। স্বপ্নভঙ্গ হয় চেলসির।
ম্যাচ শেষে থমাস টুখেলকে দেখা গিয়েছিল, তিনি নিজের ক্ষোভ আর রাগ ঝেড়ে দিচ্ছেন ম্যাচ কর্মকর্তাদের ওপর। সংবাদ সম্মেলনে টুখেলের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘কিসে আপনাকে এভাবে রাগান্বিত করেছে?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি রেফারিং দেখে যারপরনাই হতাশ।’
টুখেল বলেন, ‘আমি দেখলাম সে (রেফারি) আমার কলিগ কার্লো আনচেলত্তির সঙ্গে ভালো একটি সময় অতিবাহিত করছে। তিনি (আনচেলত্তি) খুবই বুদ্ধিমান এবং একজন ভালো মানুষ। কিন্তু আমি যখন তার কাছে যেতে চাইলাম, সে তখন আমাকে বলে, এই ম্যাচের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমি যখন দেখি সে আমার প্রতিপক্ষ কোচের সঙ্গে হাসাহাসি করছে, উচ্চস্বরে হেসে কথা বলছে, তাহলে এটা কেমন হলো? আমি মনে করি, একটি ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পর প্রতিপক্ষ কোচের সঙ্গে একজন রেফারি হয়ে তার এভাবে কথা বলার ভুল সময় এটা। ১২৬ মিনিট পর্যন্ত একটি দল যখন তাদের হৃদয়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে লড়াই করে যায় এবং শেষ মুহূর্তে এসে হেরে যায়, তখন এ ধরনের দৃশ্য সহ্য করার মত থাকে না।’
‘একজন কোচ হিসেবে আমি যখন দেখি তিনি প্রতিপক্ষ কোচের সঙ্গে হাসাহাসি করে কথা বলছে, আমি মনে করি এটা খুবই খারাপ একটি কাজ। এ সময়টায় তার এমন কাজ করা উচিৎ হয়নি। আমি তাকে এটাই বলেছি। কিন্তু সে শোনেনি।’
চেলসি রেফারির ওপর সংক্ষুব্ধ হতে পারে, দ্বিতীয়ার্ধে যখন তারা ২-০ গোলে এগিয়ে তখন মার্কো আলোনসোর একটি গোল ভিএআর রিভিউ দেখে রেফারি বাতিল করে দেন। রেফারি মার্সিনিয়াক কিন্তু মাঠের পাশে গিয়ে রিভিউটা নিজে দেখেননি।
টুখেল বলেন, ‘প্রায় সময়ই আমি এ ধরনের সমস্যায় পড়ে থাকি। আপনি যদি রিয়াল মাদ্রিদের মত ক্লাবের বিপক্ষে খেলতে যান, তখন অবশ্যই আপনি তাদের বিপক্ষে সবাইকে সাহসী পাবেন না। আমি অনুভুব করেছি, প্রথম লেগে এবং ফিরতি লেগে এই ম্যাচেও ছোট ছোট অনেক সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে গেছে। আমি গোলটি স্পষ্ট দেখিনি। কিন্তু আমি তাকে বলেছিলাম যে, আমি খুবই হতাশ হয়েছি, যখন দেখলাম তিনি নিজে গিয়ে রিভিউটা চেক করেননি।’