বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৪:৪৬ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি:
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, বার্তা প্রধান : মোহাম্মদ আসিফ খোন্দকার, আইনবিষয়ক সম্পাদক: অ্যাডভোকেট ইলিয়াস , যোগাযোগ : ০১৬১৬৫৮৮০৮০,০১৮১১৫৮৮০৮০, ঢাকা অফিস: ৪৩, শহীদ নজরুল ইসলাম রোড, চৌধুরী মল (৫ম তলা), টিকাটুলি ১২০৩ ঢাকা, ঢাকা বিভাগ, বাংলাদেশ মেইল: bdprotidinkhabor@gmail.com চট্টগ্রাম অফিস: পিআইবি৭১ টাওয়ার , বড়পুল , চট্টগ্রাম।
সংবাদ শিরোনাম:
কর্ণফুলীর মাতব্বর ঘাটে পল্টন ধসে আহত ১০ তানোরে গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্নহত্যা চট্টগ্রাম পুড়ছে তীব্র গরমে, লোডশেডিংয়ে নির্ঘুম রাত কিশোর গ্যাংয়ের হাতে শ্রমিক খুন, প্রধান আসামি ইসমাইল গ্রেপ্তার তানোরসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে অবৈধভাবে ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ফসলহানি ও জনজীবন অতিষ্ঠ সিএমপি’র পাঁচলাইশ থানা পুলিশের অভিযানে চোরাইকৃত নগদ ৬,০০,০০০/-টাকা ও একটি Iphone উদ্ধারসহ ০১ জন আসামী গ্রেফতার চীন বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে লাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দেশগুলোর সাথে কাজ করতে প্রস্তুত : শি মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ ২১ দিনে, রায় ১৭ মে দেশপ্রধান হয়ে প্রথমবার চট্টগ্রামে যাচ্ছেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রামে ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন: প্রেমের ফাঁদে ফেলে রনজিৎ দত্তকে হত্যা, প্রধান দুই আসামি গ্রেফতার

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভোগান্তি ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে রোগী দেখেন পিয়ন ও নার্স, মিষ্টি খাওয়ার জন্য নেন টাকাও

উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ:

নওগাঁর বদলগাছী ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকট চলছে। সেই সুযোগে পিয়ন ও নার্স রোগি দেখছেন। ঘটনাটি উপজেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যর পাশাপাশি চরম হতাশা বিরাজ করছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র ৬ জন এমবিবিএস ডাক্তার রয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ উচ্চতর ডিগ্রি নিতে বা কোর্স করতে চলে গেছেন। এ পর্যায়ে ৮ জন মেডিক্যাল এ্যাসিটেন্ট দিয়ে কোন রকম চিকিৎসা সেবা চালানো হচ্ছে। বদলগাছী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপ- সহকারী মেডিক্যাল এ্যাসিটেন্ট এর পদ রয়েছে মাত্র ২টি।

বাঁকি ৬ জন মেডিক্যাল এ্যাসিটেন্ট । ইউনিয়ন কমিউনিটি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র থেকে এনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ কারানো হচ্ছে। এতে খুড়িয়ে খুঁড়িয়ে কাজ চল্লেও সেবার মান বাড়ছে না।

অপর দিকে ডাঃ শাহাদত হোসেন সেলিম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট অর্থপেডিক্স হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি মাঝে মাঝে অনুপস্থিত থাকেন।

এই সুযোগ কাজে লাগায় সেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী নুরু। নুরুর বিরুদ্ধে অভিযোগ চিকিৎসক শাহাদত হোসেনের অনুপস্থিতিতে তিনি দেখেন রোগী, করেন চিকিৎসা। আবার চিকিৎসা দেওয়ার পর কৌশল হিসেবে রোগীর কাছ থেকে সেই টাকা নেন চা-মিষ্টি খাওয়ার জন্য। এমন অভিযোগে ভিত্তিতে কয়েক দিন সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে সত্যতা পাওয়া যায়।

প্রায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ডা.শাহাদত হোসেনের চেম্বার তালাবন্ধ থাকতে দেখা যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ডাক্তার শাহাদত হোসেন অফিসে আসবেন না। কি কারণে তিনি আসবেন না জানতে চাইলে তার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এরপর আউটডোরে ডাক্তার শাহাদত হোসেনের চেম্বারের সামনে দেখা যায় সেবা নিতে আসা আজিরুন বেগম (৬০) নামে একজন হাতভাঙা রোগী বসে আছে। তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, গত ২২ দিন আগে রাস্তা দিয়ে হাটতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার কারণে আমার ডান হাত ভেঙ্গে যায়। এরপর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আমার হাত প্লাস্টার করে দেয়।

এবং দশ দিন পর আউটডোরের পাঁচ নং রুমে দেখাতে বলে। দশ দিন পর পাঁচ নং রুমের ডাক্তার আমার হাত দেখে এক্সরে রিপোর্ট করতে বলে। আজকে কিছুক্ষণ আগে রিপোর্ট দেখে আমার হাত আবারো প্লাস্টার করে দিলো। এবং চা-মিষ্টি খাওয়ার জন্য ৪ শত টাকা নিলো এবং আগেও তিন শ টাকা নিছে। এক মাস পর আবার এখানে আসতে বলল।

ওই রুমের ডাক্তার আজকে আসেনি আপনাকে চিকিৎসা সেবা দিলো কে? এমন প্রশ্নের জবাবে সহজ সরল আজিরুন বেগম বলেন, সে নিজে পাঁচ নং রুমে আমার হাত দেখে চিকিৎসা করলো, এক্সরে রিপোর্ট দেখলো। একমাস পর আবার আসতে বললো। ডাক্তার দেখতে কেমন এমন প্রশ্নের উত্তরে সে বলে, ডাক্তারের দাড়ি আছে, একটু খাটো করে ফর্সা।

তার মোবাইল নং লিখে দিছে। কোন কিছু হলে ফোন দেওয়ার কথা বলছে। আমি তো ডাক্তার কে চিনি না বাবা। যেই মানুষ আমার হাত দেখলো তাকেই আমি ডাক্তার মনে করছি। এরপর রোগীর কাছ থেকে নেওয়া মুঠোফোন নম্বরে ফোন দিলে অপরপ্রান্ত থেকে অফিস সহকারী পদে হাসপাতালে চাকরি করি বলে জানান নুরু ইসলাম।

আউটডোরের পাঁচ নং রুমে আজিরুন নামে কোন রোগীকে শনিবার চিকিৎসা দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি শুধু হাতের প্লাস্টার করে দিয়েছি। কোনো টাকা পয়সা নেওয়ার কথা জানতে চাইলে চা মিষ্টি খাওয়ার জন্য চার শত টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকার করেন তিনি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ শাহাদত হোসেন সেলিম মুঠোফোনে বলেন, এর আগে নুরুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তখন তাকে আমরা ডেকেছিলাম। কিন্তু তেমন কিছু পাইনি। তবে সে ডাক্তারের সহযোগী হিসেবে সহযোগীতা করে। কারণ আমাদের জনবল একটু কম।

আর আমি মাঝে মাঝে বিভিন্ন কারণে অনুপস্থিত থাকি। তবে নিয়মিত অফিস করি। অপর দিকে,স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোরে ডায়াবেটিস ও হৃদ রোগের রোগীদের (এনসিডি)কর্নার নামে ২ নং রুমে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সেখানে ও ডাক্তার সংকটের নামে মাঝে মধ্যে ওই রুমে একজন সিনিয়র নার্স হাসিনা ডায়াবেটিস ও হৃদ রোগিদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে চিকিৎসা দেওয়া ওই নার্স হাসিনাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ডাক্তার সংকট তাই ম্যাডামের নির্দেশে চিকিৎসা দিচ্ছি। ম্যাডাম কে প্রশ্ন করা হলে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তার কথা জানান।

অন্যদিকে, বেড সংকটের কারনে বারান্দার মেঝেতে ১৪ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে দেখা গেছে। বারান্দায় ফ্যান না থাকায় তীব্র গরমের মধ্যে রোগীরা অস্থিরতা বোধ করতে দেখা যায়।কিয়ামত জুলেখাসহ কয়েকজন ভর্তি রোগীরা বলেন, হাসপাতালের খাবার মান একেবারে ভালো না। মোটা চাল, ভাতে খুব গন্ধ।

এগুলো খাওয়ার চেয়ে না খাওয়ায় ভালো। কিছু বলার নেই ভাই। জানার জন্য একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কানিজ ফারহানা।

নওগাঁ সিভিল সার্জন ডাক্তার নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, চিকিৎসক শাহাদত হোসেন এখানে ট্রেনিংএ আছেন। তাঁর অনুপস্থিতে অফিস সহকারী নুরুর চিকিৎসা ও টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখনই কথা বলছি এবং কি ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেই বিষয়টি দেখছি।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Design & Development BY ThemeNeed.Com