বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৩ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি:
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, বার্তা প্রধান : মোহাম্মদ আসিফ খোন্দকার, আইনবিষয়ক সম্পাদক: অ্যাডভোকেট ইলিয়াস , যোগাযোগ : ০১৬১৬৫৮৮০৮০,০১৮১১৫৮৮০৮০, ঢাকা অফিস: ৪৩, শহীদ নজরুল ইসলাম রোড, চৌধুরী মল (৫ম তলা), টিকাটুলি ১২০৩ ঢাকা, ঢাকা বিভাগ, বাংলাদেশ মেইল: bdprotidinkhabor@gmail.com চট্টগ্রাম অফিস: পিআইবি৭১ টাওয়ার , বড়পুল , চট্টগ্রাম।

দরজায় কড়া নাড়ছে নতুন শিক্ষাবর্ষ বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের বই পাওয়া নিয়ে সংশয়

মোঃ সেলিম উদ্দিন খাঁন বিশেষ প্রতিনিধি:

দরজায় কড়া নাড়ছে নতুন শিক্ষাবর্ষ। আর মাত্র দুদিন বাকি। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলে নতুন বইয়ের ঘ্রাণে উৎসবে মেতে ওঠার অপেক্ষায় চট্টগ্রামের লাখো শিক্ষার্থী। কিন্তু উদ্ভুত রাজনৈতিক পরিস্থিতি, পাঠ্যবইয়ে সংযোজন ও বিয়োজন এবং পাঠ্যবই ছাপানোর কার্যাদেশ দিতে দেরি হওয়ায় বছরের প্রথম দিনে বিনামূল্যের পাঠ্যবই উঠবে না শিক্ষার্থীদের হাতে।

যদিও এর আগে সংশ্লিষ্টরা বছরের শুরুতে সব বই পাবার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত তা হচ্ছে না। এর মধ্যে চট্টগ্রামে প্রাথমিক স্তরের চাহিদার সবেমাত্র ৩০ শতাংশ বই এসে পৌঁছেছে। আর মাধ্যমিকের বই আসতে শুরু করলেও তাও হাতেগোনা। ফলে বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়ার ঐতিহ্য রক্ষা দূরে থাক, ফেব্রুয়ারিতেও দেওয়া যাবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। তবে চাহিদার সব বই পেতে পুরো জানুয়ারি মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, চট্টগ্রামের ৪ হাজার ৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ১০ লাখ ৪ হাজার ৬৩২ জন। আর এবার নতুন বইয়ের চাহিদা ৪৪ লাখ ১৮ হাজার ১৮৭ কপি। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৬, বাংলা মাধ্যমের চাহিদা ৪০ লাখ ৩৪ হাজার ১৯৬ এবং ইংরেজি মাধ্যমে ৮৮ হাজার ৫৮৪ কপি। এদিকে, চট্টগ্রামের ৬ থানা শিক্ষা অফিস ও সব উপজেলা মিলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৫৩৪ জন।

তার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিকে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৬৮ জন, বাংলা মাধ্যমে ৮ লাখ ৩৮ হাজার ১৬৬ জন আর ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ হাজার ৭৯০ জন। এছাড়া চট্টগ্রামের স্কুলগুলোতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ৩০৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য তাদের মাতৃভাষায় লেখা বইয়ের চাহিদা রয়েছে ৬৭১ কপি। যা চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এবং নগরের পাঁচলাইশ থানা শিক্ষা অফিসের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেওয়া হয়। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা এবং গারো সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের মাতৃভাষায় লেখা বই পেয়ে থাকে। অন্যদিকে, বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬১৭ জন। এসব শিক্ষার্থীর বিপরীতে বইয়ের চাহিদা রয়েছে ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৮৫১ কপি। দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৮৩ জন, আর বইয়ের চাহিদা ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৯৪৯ কপি। তৃতীয় শ্রেণির মোট শিক্ষার্থী ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৫২ জন। তাদের বিপরীতে বইয়ের চাহিদা ১০ লাখ ১২ হাজার ৫১২ কপি।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮৭ জন। এসকল শিক্ষার্থীর বিপরীতে বইয়ের চাহিদা ১০ লাখ ১৯ হাজার ৯২২ কপি। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী রয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮২৭ জন। এসব শিক্ষার্থীর বিপরীতে বইয়ের চাহিদা রয়েছে ১০ লাখ ৬ হাজার ৯৬২ কপি।একইভাবে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ হাজার ১০০ জন। এসব শিক্ষার্থীর বিপরীতে বইয়ের চাহিদা ১২ হাজার ৩০০ কপি।

দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ৩ হাজার ৯৫২ জন, আর বইয়ের চাহিদা ১১ হাজার ৮৫৬ কপি। তৃতীয় শ্রেণির মোট শিক্ষার্থী ৩ হাজার ৮০৩ জন। তাদের বিপরীতে বইয়ের চাহিদা রয়েছে ২২ হাজার ৮১৮ কপি। চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী ৩ হাজার ৫৮০ জন।

বিপরীতে বইয়ের চাহিদা রয়েছে ২১ হাজার ৪৮০ কপি। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ৩ হাজার ৩৫৫ জন। আর বইয়ের চাহিদা রয়েছে ২০ হাজার ১৩০ কপি।এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এস এম আব্দুর রহমান সিভয়েস২৪’কে বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত আমাদের মোট চাহিদার ৩০ শতাংশ বই এসে পৌঁছেছে। থানা-উপজেলা পর্যায়ে আমরা গত ৫ ডিসেম্বর থেকে বই সরবরাহ শুরু করেছি।

সব বই না হলেও বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে একটা করে বই দেওয়া সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করছি।’ জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, চট্টগ্রামে মাধ্যমিক স্তরে বইয়ের চাহিদা রয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৩২ হাজার ৯৩ কপি।

এর মধ্যে ইবতেদায়ি, দাখিল, দাখিল ভোকেশনাল, মাধ্যমিক ভোকেশনাল, মাধ্যমিক বাংলা ও ইংলিশ ভার্সন মিলে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ৯৯৪ জন। অথচ সবেমাত্র বই এসেছে কেবল ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির। তাও মাত্র কয়েকটি বিষয়ের। অর্থাৎ মাধ্যমিকে এখনো পর্যন্ত তেমন কোনো বই পৌঁছেনি।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম খীসা সিভয়েস২৪’কে বলেন, ‘আমাদের গতকাল থেকে বই আসা শুরু করেছে। কিন্তু এ পর্যন্ত বলার মতো উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় বই আসেনি। এর মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির সাতটি বিষয় আর সপ্তম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের বই এসেছে।

তবে তাও সংখ্যায় বলার মতো না। এজন্য বলছি না। তবে বই আসা শুরু করেছে। কিছু লোডিং হচ্ছে আর কিছু এখনো আনলোডিং আছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে এ শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ‘সব বই পেতে পেতে আমাদের পুরো জানুয়ারি মাসটা লাগতে পারে। তবে আমার কাছে এ সংক্রান্ত সঠিক তথ্য নেই। ধারণা করছি, প্রযুক্তির কল্যাণে জানুয়ারির মধ্যে সব বই আমরা পেয়ে যাবো।’

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Design & Development BY ThemeNeed.Com