রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন
শনিবার ঘুমাতে ঘুমাতে রাত ২ টা পেরিয়ে যায়। রাত ৪ টার দিকে আচমকা ঘুম ভাংগে এস আই ইফতেখারের ফোনকলে। ওপাশ থেকে ফোনে হাউমাউ করে কান্না করছে ইফতেখার ।কান্নার মাঝখানে শুধু এটুকু বুঝতে পারছিলাম আমাদের রাত্রিকালীন টহল টীমের বড় বিপদ হয়েছে। ঘুম থেকে দ্রæত উঠে কোনরকমে ইউনিফর্ম গায়ে চাপিয়ে ছুটে যাই এস আই বাশারকে নিয়ে শেরপুর গোল চত্বরে। ওখানে পৌছে এক দুঃস্বপ্নের ভয়াবহ চিত্র দেখতে পাই। দুমরে মুচরে যাওয়া ময়মনসিংহ – সিলেটগামী বাসের পড়ে থাকার দৃশ্য। এ দৃশ্য দেখে মনের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠে। ওখানে যাবার একটু আগেই আহত সকলকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এরপর দ্রুত চলে যাই সিলেট হাসপাতালে। যাবার সময়টুকুতে বারবার মনে মনে কামনা করছিলাম আল্লাহ যেন খুব খারাপ কোন কিছু না দেখতে হয়! কিন্তু বিধি বাম! ততোক্ষনে না ফেরার দেশে চলে গেছে আমাদের জেলা পুলিশ মৌলভীবাজার পরিবারের (কনস্টেবল) স্নেহের ছোট ভাই কন্সটেবল রাগিব আলী! মাত্র তিন বছর হলো তার চাকরী জীবন। কতো স্বপ্ন নিয়েই না ভাইটি আমার পুলিশে জয়েন করেছিলো ! ঘাতক বাস ড্রাইভার সম্পূর্ণ উলটো পথে গিয়ে বেপরোয়া চালিয়ে সরাসরি গোল চত্বরের রেলিং ভেংগে টহল ডিউটিরত পুলিশ ভাইদের উপর তুলে দেয়! গুরুতর আহত হন কন্সটেবল রাগিব, কন্সটেবল কামরান, কন্সটেবল আনিস। এছাড়া বাসের শিশু, নারী ,পুরুষসহ আরও অনেকে গুরুতর আহত হয়ে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।রাগিবকে হারিয়ে আজ সারাদিন হাসপাতালকে পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম স্থান মনে হয়েছে। গুরুতর আহত কন্সটেবল কামরান ,আনিস এখন লড়াই করছে হাসপাতালের বেডে। তোমাদের জন্য গর্বিত আমরা।দায়িত্ব পালন করতে করতে শহীদ হলে প্রিয় রাগিব।আল্লাহ যেন আমার ভাইটিকে জান্নাতুল ফিরদউসের বাগিচায় স্থান করে দেন।আহতদেরকে আল্লাহ দ্রæত সুস্থতা দান করুন এই দোয়া করছি। নিহত/আহতদের মা বাবা, স্বজনদের এই শোক সইবার শক্তি দান করুন হে রব্বুল আলামিন।
লেখক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মৌলভীবাজার মোঃ জিয়াউর রহমান।