সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১১ অপরাহ্ন
মোঃ সেলিম উদ্দিন খাঁন বিশেষ প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গত এক মাস ধরে মুঠোফোনে ‘জিনের বাদশা’ পরিচয়ে চাঁদা চেয়ে ব্যবসায়ীদের ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে একটি চক্র। চাঁদা না পেলে দোকানে বিস্ফোরণ ঘটানো এবং দোকানিকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এরইমধ্যে চাঁদা না পেয়ে উপজেলার কেরানীহাটের একটি দোকান আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।এরপর চাঁদা দাবিকারীদের আইনের আওতায় আনতে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন ক্ষতিগ্রস্ত ওই দোকানের স্বত্তাধিকারী মোহাম্মদ জুনায়েদ। সে মামলায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার মো. রিয়াজ উদ্দিন (৪০) সাতকানিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড ভোয়ালিয়া পাড়ার মোঃ হোসেনের ছেলে।রবিবার (০১ ডিসেম্বর) সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকমর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, গত এক মাস ধরে সাতকানিয়ার কেরানীহাটের ব্যবসায়ীদের কথিত ‘জিনের বাদশা’ পরিচয়দানকারী কয়েকটি মোবাইল নম্বর থেকে ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করে আসছে। হুমকির ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছিল। হুমকির বিষয়ে ব্যবসায়ীরা সাতকানিয়া থানায় জিডি করেন। জিডি তদন্তকালে কথিত ‘জিনের বাদশা’ কেরানীহাট বাজারের অন্তত ৩০-৪০ জন ব্যবসায়ীকে চাঁদা দাবি করে হুমকি দেয়। চাঁদা না পেয়ে গত ১৫ নভেম্বর কেরানীহাট বাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জুনায়েদের দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জুনাইদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে মুঠোফোনে চাঁদা দাবি করা ব্যক্তিদের শনাক্তে মাঠে নামে পুলিশ। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কেরানীহাটের ব্যবসায়ীদের ক্রমাগত হুমকি প্রদানকারী সীম সমূহের সিডিআর ও রেজিস্ট্রেশন পর্যালোচনা করে সাতকানিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড ভোয়ালিয়া পাড়ার মোঃ হোসেনের ছেলে মো. রিয়াজ উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়।সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকমর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান জানান, রিয়াজ উদ্দিনকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং ঘটনায় জড়িত মূল হোতা তাঁর শ্যালক এমরান হোসেনের নাম প্রকাশ করে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে রিয়াজ আরো জানায়, তার নিজের ও এমরানের পরিবারের লোকজনের এনআইডি ব্যবহার করে কয়েকটি সিম এমরান ব্যবহার করছে।ওসি আরও জানান, ৬ মাস পূর্বে এমরান টেকনাফ থানা এলাকায় একইভাবে ব্যবসায়ীদের হুমকি প্রদান করে এবং ব্যবসায়ী কামালের দোকানে অগ্নিসংযোগসহ বিকাশের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করে। এমরানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আদালতে বিচারাধীন আছে। গ্রেফতার রিয়াজকে আদালতে প্রেরণ করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। ঘটনায় জড়িত মূল হোতা এমরান হোসেনকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।