শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো. সিরাজুল হককে অন্যত্র বদলীর দাবিতে উপজেলা দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।গতকাল (১৮ আগস্ট) বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাব-রেজিস্ট্রার মো. সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, উৎকোচগ্রহন ও সীমাহীন স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উত্থাপন করা হয়।
এর আগে বাসাইল উপজেলা দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির নেতারা সাব-রেজিস্ট্রার মো. সিরাজুল হকের নানা অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে জেলা রেজিস্ট্রারের (ডিআর) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।প্রতিকার না পাওয়ায় গত ৪ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ওই উপজেলায় সব ধরনের দলিল সম্পাদন বন্ধ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- উপজেলা দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ২০২১ সালের ২৮ আগস্ট সাব-রেজিস্ট্রার মো. সিরাজুল হক বাসাইল উপজেলায় যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়ম, উৎকোচগ্রহন ও সীমাহীন স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, বাটওয়ারা, জমির শ্রেণি ডোবা, পালান, পুকুর থাকলে অনলাইন সফটওয়্যার গ্রহন না করায় দলিলগুলো এনালগ (হাতে লিখে) সম্পাদন করতে হয়। কিন্তু হাতে লেখা দলিল সম্পাদন করতে গেলে দলিল প্রতি পাঁচ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত সাব-রেজিস্ট্রারকে ঘুষ দিতে হয়। অন্যথায় তিনি দলিল রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেন না। এছাড়া পৈত্রিক সূত্রে বিএস রেকর্ড চূড়ান্ত থাকলেও খারিজের বাহানায় সাব-রেজিস্ট্রারের সাথে চুক্তিতে না গেলে দলিল সম্পাদন করা হয় না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, মসজিদ-মাদ্রাসা, গোরস্থানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে কোন প্রকার ওয়াকফ্ দলিল তিনি রেজিস্ট্র্রি করেন না। তবে বন্টননামা, না-দাবি, ভ্রম সংশোধন, ব্যাংক মর্গেজসহ অন্যান্য দলিল রেজিস্ট্রি করতে নানা হারে উৎকোচগ্রহন করছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাব-রেজিস্ট্রার মো. সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য এবং অবজ্ঞা ও ব্যঙ্গ করার অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান। তারা ওই সাব রেজিস্ট্রারের অনতিবিলম্বে অন্যত্র বদলীর দাবি জানান।
এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মতিয়ার রহমান (গাউছ)। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়- সাব-রেজিস্ট্রার মো. সিরাজুল হক একটি দপ্তরের প্রধান হলেও উপজেলা পরিষদের কোন সভায় তিনি যোগদান করেন না। বিভিন্ন জাতীয় দিবসের কর্মসূচিতেও তিনি অনুপস্থিত থাকেন।
তার নানা অনিয়ম, উৎকোচগ্রহন ও সীমাহীন স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিকারে বাসাইল উপজেলা দলিল লেখক কল্যাণ সমিতি ইতোপূর্বে কালোব্যাজ ধারণ, প্রতীকী অনশন সহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রায় ছয় মাস অতিবাহিত হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে গত ৪ আগস্ট থেকে উপজেলা দলিল লেখক কল্যাণ সমিতি দলিল লেখা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে উপজেলায় জমির দলিল সম্পাদন কাজ বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাব-রেজিস্ট্রার মো. সিরাজুল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।সংবাদ সম্মেলনে বাসাইল দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ ফারুক, সাংগঠনিক মো. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।