রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৮ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি:
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, বার্তা প্রধান : মোহাম্মদ আসিফ খোন্দকার, আইনবিষয়ক সম্পাদক: অ্যাডভোকেট ইলিয়াস , যোগাযোগ : ০১৬১৬৫৮৮০৮০,০১৮১১৫৮৮০৮০, ঢাকা অফিস: ৪৩, শহীদ নজরুল ইসলাম রোড, চৌধুরী মল (৫ম তলা), টিকাটুলি ১২০৩ ঢাকা, ঢাকা বিভাগ, বাংলাদেশ মেইল: bdprotidinkhabor@gmail.com চট্টগ্রাম অফিস: পিআইবি৭১ টাওয়ার , বড়পুল , চট্টগ্রাম।
সংবাদ শিরোনাম:
চট্টগ্রামে সাংবাদিককে হত্যাচেষ্টা, ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা ছাত্র আন্দোলনে হামলা : লোহাগাড়ায় মামলার আসামি গ্রেফতার দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির অভিযানে ৭ ব্যারেল চোরাই ডিজেল তৈল সহ গ্রেপ্তার ২ পূর্বকোণ-পত্রিকার সহ-সম্পাদক ও শিক্ষার্থীর ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন চকরিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান’কে গ্রেপ্তার করেছে”র‌্যাব-১৫ ও র‌্যাব-৭ এর আভিযানিক দল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার- মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য মৃত্যুর মিছিল”নিয়ন্ত্রণ হারিয়েএক’মোটরসাইকেল চালক নিহত চন্দনাইশে যাত্রীবাহী বাস থেকে দেশীয় তৈরি পাইপ গান উদ্ধার গ্রেপ্তার ২ চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ প্যানেল চেয়ারম্যান হাবিবের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের পেকুয়ায় অটোরিকশা-ডাম্পার ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৫ চকরিয়ায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা

ঈদে যে ভুলগুলো হয়

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। ঈদ ও তার আনন্দ সমাগত হওয়ার সাথে সাথে আমরা কিছু জিনিসের ব্যাপারে নির্দেশনা দিতে চাই যেগুলো মানুষ আল্লাহ’র শারী’আতে এবং রাসূলুল্লাহ’র (আল্লাহ তাঁর উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন) সুন্নাহকে না জেনে করে থাকে। যেমনঃ

১) ঈদের দিন সারা রাত ইবাদতের মাধ্যমে অতিক্রম করার বিধান আছে এরূপ বিশ্বাস পোষণ করা:

কিছু মানুষ বিশ্বাস করে যে, ঈদের দিন সারারাত ইবাদতের মাধ্যমে অতিক্রম করার বিধান আছে। এটা একধরণের নতুন প্রবর্তিত বিষয় (বিদ’আহ) যা কিনা রাসূলুল্লাহ (আল্লাহ তাঁর উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন) থেকে প্রমাণিত নয়। বরং এটা যঈফ (দুর্বল) হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যাতে বলা আছে, “যে ঈদের রাতে জেগে থাকবে, তার হৃদয় কখনো মারা যাবে না যেদিন সব হৃদয় মারা যাবে।” এই হাদীসটি সাহীহ নয়। এটা বর্ণিত হয়েছে দুইটি ইসনাদের মাধ্যমে, যার একটি হল মাউযূ (জাল) এবং অপরটি হল যাইফুন জিদ্দান (খুবই দুর্বল)। দেখুন [আল-আলবানীর ‘সিলসিলাত আল-আহাদীস আল-যঈফাহ ওয়া’ল-মাউযূ’আহ ’,(৫২০,৫২১)]

তাই অন্য রাতগুলোকে বাদ দিয়ে ঈদের রাত্রিকে ক্বিয়ামের জন্য বাছাই করার কোন বিধান নেই, তবে সে ছাড়া যার ক্বিয়ামের অভ্যাস আছে, সেই ক্ষেত্রে ঈদের রাতে ক্বিয়াম করায় কোন দোষ নেই।

২) দুই ঈদের দিনে কবর যিয়ারত করা:

এটা ঈদের উদ্দেশ্যের সাথে সাংঘর্ষিক, যা কিনা আনন্দ ও সুখের প্রকাশ, এবং তা রাসূল (আল্লাহ তাঁর উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন)-এর শিক্ষা এবং পূর্ববর্তী সাহাবী ও তাবিঈগনের আচরনেরও (শিক্ষারও) বিরুদ্ধে যায়। সাধারণভাবে বলা যায় যে, কোন নির্দিষ্ট দিনে কবরস্থানে যাওয়া এবং তাকে একটি উৎসব বানিয়ে নেয়ার ব্যাপারে নাবীর নিষেদ্ধাজ্ঞা আছে, যেমনটি আলিমগণ বলেছেন। আর এটি রাসূলের কবরকে ঈদ হিসেবে গ্রহন না করার সাধারণ নিষেদ্ধাজ্ঞার আওতায় পড়ে, কারণ, বিশেষ কিছু সময়ে ও পরিচিত কিছু মৌসুমে যদি কবর যিয়ারত করতে চাওয়া হয় যার অর্থ দাঁড়ায় কবরকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ করা,যেভাবে আলিমগণ বলেছেন। [দেখুন আল-আলবানীর ‘আহকাম আল-জানা’ইয ওয়া বিদা‘উহা ’ (পৃঃ ২১৯,২৫৮)]

৩) জামা’আহ (জামা‘আতে স্বালাত) পরিত্যাগ করা এবং দেরিতে ঘুমানো ও সালাত না পাওয়া:

দুর্ভাগ্যক্রমে, আপনি দেখবেন যে কিছু মুসলিমের সালাত ছুটে যায় এবং জামা’আহ পরিত্যাগ করে। নাবী (আল্লাহ তাঁর উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন) বলেছেনঃ “আমাদের এবং তাদের মধ্যে চুক্তি হল সালাত , যে তা পরিত্যাগ করবে সে কুফরী করল।” [বর্ণিত হয়েছে আত-তিরমিযী হতে, (২৬২১);আন-নাসা’ঈ (৪৬৩) সাহীহ আত-তিরমিযী তে আল-আলবানী একে সাহীহ বলেছেন।]

এবং তিনি বলেছেন: “মুনাফিক্বদের জন্য ‘ইশা’ এবং ‘ফাজর’ এর সালাত সবচেয়ে বোঝাস্বরূপ। তারা যদি জানত তার মধ্যে (কী কল্যান) আছে, তবে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে (সেই দুই সালাতে) উপস্থিত হত। আর আমি চিন্তা করেছিলাম যে স্বালাতের আদেশ করব আর তা কায়েম করা হবে এবং একজন লোককে আদেশ করব যে লোকদের নিয়ে (ইমাম হিসেবে) সালাত আদায় করবে, এরপর আমি আমার সাথে কিছু লোক নিয়ে যাবো যাদের সাথে কাঠের বোঝা থাকবে, সেই সমস্ত লোকদের কাছে যারা জামা‘আতের সালাতে উপস্থিত হয়নি , এরপর তাদের বাড়িঘরে আগুন জ্বালিয়ে দিব।” [মুসলিম থেকে বর্ণিত(৬৫১)]

৪) সালাতের স্থানে, রাস্তাঘাট কিংবা অন্য কোন স্থানে পুরুষদের সাথে নারীদের একত্রিত হওয়া আর ঐ সব জায়গায় পুরুষদের সাথে তাদের ভিড় জমানো:

এতে আছে মহা ফিতনাহ ও বড় বিপদ। এ ব্যাপারে ওয়াজিব হল নারী এবং পুরুষ উভয়কেই সতর্কবাণী দেয়া এবং যতটুকু সম্ভব প্রতিরোধের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেয়া। পুরুষ ও তরুনদের পুরোপুরি চলে যাবার আগে নারীদের কখনোই সালাতের স্থান ত্যাগ করা উচিত নয়।

৫) কিছু নারীদের সুগন্ধি ও সাজগোজ করে পর্দা ছেড়ে বের হওয়া:

এই সমস্যাটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারটিকে খুব হালকাভাবে নেয়। এ ব্যাপারে আল্লাহর সাহায্য আমরা কামনা করি। কিছু নারী যখন তারা তারাউয়ীহ (তারাবীহ) , ঈদের সালাত আদায় অথবা অন্য জায়গায় বের হয় তখন তার সবচেয়ে সুন্দর পোশাকটি পরিধান করে এবং সবচেয়ে সুন্দর সুগন্ধি ব্যবহার করে আল্লাহ তাদেরকে সঠিক পথ দেখান। আর আল্লাহ’র রাসূল (আল্লাহ তাঁর উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন) বলেছেনঃ “যে নারী সুগন্ধি ব্যবহার করে এবং লোকজনের পাশ দিয়ে এমনভাবে যায় যাতে তারা তার সৌরভ উপলব্ধি করতে পারে সে একজন ব্যাভিচারিণী।” [বর্ণনা করেছেন আল-নাসা’ই (৫১২৬); আত-তিরমিযী (২৭৮৩); আল-আলবানী ‘সাহীহ আল-তারঘীব ওয়া আত-তারহীব’ (২০১৯) –এ একে হাসান হিসেবে উল্লেখ করেছেন।]

আবূ হুরাইরাহ (আল্লাহ তাঁর উপর সন্তুষ্ট হোন) থেকে বর্নিত যে তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ’র রাসূল (আল্লাহ তাঁর উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন) বলেছেনঃ “জাহান্নামবাসী দুটো শ্রেণী আছে যাদেরকে আমি দেখি নি। তারা এমন মানুষ যাদের কাছে গরুর লেজের ন্যায় চাবুক থাকে যা দিয়ে তারা লোকদের মারে এবং এমন নারী যারা কাপড় পরা স্বত্তেও বিবস্ত্র থাকে, নিজেরাও পথভ্রষ্ট এবং অপরকেও বিপথে পরিচালনা করে, তাদের মাথা হেলে যাওয়া উটের কুঁজের ন্যায়। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না এমনকি এর সৌরভও পাবে না, যদিও এর সৌরভ এই এই দূরত্ব থেকে পাওয়া যায়।” [মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে (২১২৮)]

নারীদের অভিবাবকদের অবশ্যই আল্লাহকে ভয় করা উচিত তাদের স্বার্থে যারা তাদের আশ্রয়ে আছে এবং আল্লাহ তাদেরকে রক্ষা করা এবং ভরণ-পোষণ করার জন্য যে দায়িত্ব ওয়াজিব করেছেন তা সম্পাদন করা, কারণ আল্লাহ বলেছেনঃ “পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।” [সুরা নিসা ৪:৩৪]

সুতরাং, তাদের (নারীদের অভিভাবকদের) তাদের (নারীদের) উচিত তাদেরকে অবশ্যই সঠিক পথে পরিচালিত করা এবং তাই দেখানো যা তাদের এই দুনিয়া ও আখিরাতে পরিত্রাণ ও নিরাপত্তার পথে পরিচালিত করবে, তাদেরকে আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা থেকে দূরে রাখা এবং উৎসাহ যোগানো যাতে তারা আল্লাহ’র নিকটবর্তী হতে পারে।

৬) হারাম গান শোনা:

বর্তমানে মন্দ কাজগুলির মধ্যে যা চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে তা হচ্ছে গান বাজনা। এগুলো খুব ব‍্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং মানুষ এই ব্যাপারটিকে হালকাভাবে নিচ্ছে। এটা এখন টিভি, রেডিও, গাড়িতে, ঘরে এবং মার্কেটগুলোতে চালু আছে। কোন শক্তি ও ক্ষমতা নেই আল্লাহ ছাড়া এ সব থেকে ফিরানোর । এমনকি মোবাইল ফোনও এই খারাপ জিনিস থেকে মুক্ত না। অনেক কোম্পানী আছে যারা মোবাইল ফোনে সর্বাধুনিক মিউজিক টিউন দেওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা করে এবং এর সাহায্যে সঙ্গীত এখন মসজিদে প্রবেশ করেছে, আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন এটা মহাবিপদ এবং খুবই মন্দ ব্যাপারগুলোর একটি যে আল্লাহ’র ঘরসমূহে (মাসজিদসমূহে) মিউজিক শুনতে পান। এটা নাবী’র (আল্লাহ তাঁর উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন) কথার সত্যতা প্রমাণ করে: “আমার উম্মাতের মধ্যে কিছু লোক এমন থাকবে যারা ব্যাভিচার, সিল্ক, আ্যলকোহল এবং বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করবে।” [আল-বুখারী থেকে বর্ণিত।]

তাই একজন মুসলিমের আল্লাহকে ভয় করা উচিত এবং তার জানা উচিত তার উপর আল্লাহ’র যে নি‘আমাত (অনুগ্রহ) আছে তার জন্য তার শোকর করা কর্তব্য। এটা কখনোই নি‘আমাতের শোকর করা নয় যা একজন, মুসলিম তার প্রতিপালকের অবাধ্যতা করবে যিনি তার উপর অসীম নি‘আমাত বর্ষণ করেছেন। একজন ন্যায়পরায়ণ ব্যাক্তি কিছু লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যারা ঈদের আনন্দে মত্ত হয়ে গর্হিত কাজ করেছিল, তখন তাদেরকে তিনি বললেন: “যদি তোমরা রামাদ্বানে ইহসান (ভালো করে) থাকো তাহলে এটা সেই ইহসানের শোকর করার কোন পথ নয়। আর যদি তোমরা রামাদ্বানে খারাপ করে থাকো, তাহলে আর-রাহমানের (পরম দয়াময়ের) সাথে যে খারাপ ব্যবহার করল, সে এমন করতে পারে না।”

আর আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Design & Development BY ThemeNeed.Com