বাংলাদেশ প্রতিদিন খবর
- বুধবার ২৭ এপ্রিল, ২০২২ / ৭৪ জন দেখেছে
টাঙ্গাইল শহীদ মিনার চত্ত্বরে ‘মাস ব্যাপী সবার জন্য ইফতার’ করার সুবিধা করে দিয়েছে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ত্রিবেণী’ ও বিন্দুবাসিনী সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের এসএসসি ৯২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন আড়াই শ থেকে তিন শ মানুষ বিনা পয়সায় এখানে ইফতার করতে পারছেন। প্রতিদিন বিনা পয়সায় ইফতার পেরে খুশি অনেক মানুষ।
উদ্যোক্তারা জানান, ২০১৫ সালে তারা এই দুই সংগঠন মিলে রোজার মাসে ইফতারির আয়োজন করে। পাঁচ বছর রোজার মাসে এ কর্মসূচি চলার পর বিগত দুই বছর করোনার কারনে বন্ধ ছিলো। এবার আবার এ কার্যক্রম শুরু করেছেন। এখানে কোন দিন বুট, মুড়ি, পেঁয়াজো, চপ, জিলাপি, ফলসহ বিভিন্ন ইফতার সামগ্রী দিয়ে রোজাদারদের আপ্যায়ন করা হয়। আবার কোন দিন খিচুড়ি মাংসের আয়োজন করা হয়। তবে প্রতিদিনই শরবত থাকে।
শহীদ মিনার চত্তরে গিয়ে দেখা যায়, পুরো এলাকাজুড়ে ত্রিপল দিয়ে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। বিকেল হতেই উদ্যোক্তারা প্লেট গ্লাস গোছানোর কাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে দেখা গেলো ভ্যান গাড়ি যোগে খিচুরির বড় হাড়ি নিয়ে আসা হলো। ইফতারের আধা ঘন্টা আগে থেকেই দুএকজন করে মানুষ এসে বসতে শুরু করেন। ১০/১৫ মিনিটের মধ্যেই পরিপূর্ণ হয়ে যায় শহীর মিনার চত্তর। এখানে দরিদ্র, শ্রমজীবী, শিক্ষার্থী, পথচারি, ছিন্নমূল নানা শ্রেণীর মানুষকে ইফতার করতে বসতে দেখা যায়।
ইফতার করতে আসা হাসেম মিয়া বলেন, আমি শহরের একটি অফিসে চাকরি করি। বাড়ি ফেরার পথে ইফতারের সময় হওয়ায় এখানে ইফতার করি। কোন দিন খিচুরি মাংস। আবার কোন দিন বুট, মুড়ি, পেঁয়াজো, চপ, জিলাপি দিয়ে ইফতার করি। ইফতার করতে খুবই ভাল লাগে।
অপর জন বাবুল মিয়া বলেন, এখানে ইফতারের আয়োজন করায় আমার মতো স্বল্প আয়ের মানুষের খুব সুবিধা হয়েছে। রোজা রেখে কোথায় ইফতার করবো তা নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।
আজগর আলী নামক বলেন, আমি প্রতিদিন এখানে ইফতার করেন। সেই সাথে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এখানে কাজ করেন। বস্তিবাসী জুলেখা বেগম জানান, তিনি তার নাতিকে নিয়ে এখানে ইফতার করে যান। জামালপুর থেকে আসা বেল্লাল হোসেন জানান, একটি কাজে টাঙ্গাইল এসেছিলেন। ইফতারের সময় হয়ে যায়। তখন দেখতে পান এখানে সবার জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তা দেখে তিনি ইফতার করতে বসে যান।
ত্রিবেণী’র বর্তমান সভাপতি মোমিনুল ইসলাম জানান, প্রথম রোজা থেকে শেষ রোজা পর্যন্ত ইফতারের আয়োজন থাকে। সংগঠনের সদস্যরা চাঁদা দিয়ে এর ব্যয় বহন করেন। অসহায়, দরিদ্র এবং পথচারিদের ইফতারের সুবিধার জন্যই তারা এ আয়োজন করছেন। মানুষ অনেক তৃপ্তি নিয়ে ইফতার গ্রহণ করেন। তা দেখে তাদের খুব ভাল লাগে।
সরকারি এমএম আলী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শামসুল হুদা জানান, এটি খুব ভাল উদ্যোগ। সমাজের বিত্তবান মানুষ বা বিভিন্ন সংগঠন এ ধরনের আয়োজন করলে আরও মানুষ উপকৃত হতে পারবে।