শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের নামুড়ীতে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অনশন শুরু করেছে ভার্সিটি ভর্তি-ইচ্ছুক এক শিক্ষার্থী।
পুলিশের ভূমিকা নীরব।গত (১ এপ্রিল) দুপুর থেকে নামুড়ি মদনপুর এলাকায় স্বামী আশিকুর জামান(২২) এর বাড়িতে গিয়ে এ অনশন শুরু করে রিপা আক্তার (১৮) নামে ওই শিক্ষার্থী।আশিকুর জামান নামুড়ীর মদনপুর এলাকার আমির হোসেনের পূত্র। এছাড়াও রিপা আক্তার একই এলাকার আবুল কালামের মেয়ে বলে জানা যায়।
এলাকাবাসী ও মেয়ের পরিবার সূত্রে জানা যায়, একই পাড়ার বাসিন্দা হওয়ায় তাদের দুজনের মধ্যে পরিচয় ছিলো। পড়াশুনার সুবাদে উভয়েই রংপুরে বসবার করতে গিয়ে পরিচয় সূত্রে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে গত বছরের ডিসেম্বরে সাবালক হওয়ায় দুজনের সম্মতিতে নোটারি পাবলিক কার্যালয় লালমনিরহাটের এভিডেভিট করে তারা বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। পরে রংপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করেন।পরিবারকে লুকিয়ে ছেলে রংপুরে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করে ও মেয়ে নার্সিংয়ের ভর্তি কোচিংয়ের কথা বলে একসাথে বসবাস করত।বিষয়টি ছেলের পরিবার বুঝতে পেরে চাপ দিয়ে কৌশলে ছেলেকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে মেয়ের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এক সপ্তাহ থেকে স্বামীকে খুজে না পেয়ে অবশেষে মেয়ে ছেলের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে স্বামীর খোঁজ করে। কিন্তু এতে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলেকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমেও স্বামীর খোঁজ করতে না পেরে অবশেষে ছেলের বাড়িতে ঢুকে অনশন শুরু করে।
এ বিষয়ে রিপা আক্তার বলেন, আমরা দুজনে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে বিয়ে করে সংসার করতেছিলাম। আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার স্বামীকে কৌশলে ডেকে এনে তাকে লুকিয়ে রেখেছে। আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমি আমার স্বামীকে ফিরে পেতে অনশনে বসেছি। এখানে আসার পর বাড়িতে ঢুকতেও আমাকে বাধা দেওয়া হলে জোর করে আমি বাড়িতে ঢুকেছি। আমি আমার অধিকার পেতে চাই।মেয়ের মা রাশেনুর খাতুন বলেন, আমার স্বামীসহ ঢাকায় গার্মেন্টস করে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাই। কস্ট করে সংসার চালাই। আমার মেয়ে চাচীসহ থাকতো। মেয়ে গোপনে বিয়ে করেছে শুনে ঢাকা থেকে এসেছি সমাধান করতে। তিনদিন ধরে ছেলের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে সমাধান করতে ব্যার্থ হওয়ায় মেয়েকেও আটকাতে পারিনি। সে তার শ্বশুর বাড়ি চলে গেছে।
এ বিষয়ে ওই ছেলের নাম্বারে ফোন দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। ছেলের বাবা আমির হোসেন মোবাইলে বলেন, আমি বাইরে আছি। আপনার সাথে পরে কথা বলবো।পলাশী ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রশীদ বলেন, আমি ঘটনা শুনে এসে উভয় পরিবারের সাথে কথা বলেছি। মেয়েকে নিরাপদ স্থানে রেখে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। মেয়েকে তার স্বামীর অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে পলাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউল ইসলাম ফাতেমী পাভেল বলেন, ঘটনাটি শুনে স্থানীয় মেম্বারকে সেখানে পাঠিয়েছি। যেহেতু মেয়েটি বাড়ির বাইরে তাই নিরাপদ যায়গায় রেখে দুই পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে বিষয়টি মিমাংসা করা হবে।আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকতারুল ইসলাম বলেন, ঘটনার প্রেক্ষিতে পুলিশ সেখানে গিয়েছিলো। আমরা গুরুত্বসহকারে বিষয়টি দেখছি।