বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ১২:০৪ পূর্বাহ্ন
রাজশাহী,প্রতিনিধি:
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নির্বিচার গুলি ও মানুষ হত্যার ঘটনায় শহীদ পরিবারগুলোর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে গত ২৪ সালের ডিসেম্বর মাসেই ক্ষমা চেয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের চার মাস পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ক্ষমা প্রার্থনা করে ছিলেন।
পুলিশ প্রধানের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচক মনে করেন গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার এবং আন্দোলনে সক্রিয় শিক্ষক ও অধিকারকর্মীরা। তবে তাদের দাবি, যাদের নির্দেশে ও যাদের গুলিতে নির্বিচার মানুষ হত্যা করা হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
গত ২০ নভেম্বর আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর বাহারুল আলম আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমে এ কথা বলেন। তিনি সেই সম্মেলনে আরো বলেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ পুলিশ এক বিরাট চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। পুলিশের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করতে হয়েছে বলে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, পুলিশের মনোবল ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে কাজ চলছে। নিরপরাধ কেউ মামলার আসামি হলে তাঁকে হয়রানি বা গ্রেপ্তার করা হবে না বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
তবে উল্টো চিত্র রাজশাহী তানোর থানা পুলিশ টিমের,পুলিশ প্রধানের নির্দেশনা অমান্য করে স্থানীয় কিছু কতিপয় বিএনপি’র নেতার নির্দেশে চলছে গণ গ্রেপ্তার। এমনি ঘটনা ঘটেছে চলতি মাসের ১৩ই ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউপির ১ নং ওয়ার্ড গাগরন্দ গ্রামের মৃত সাদেক মন্ডলের ছেলে নুরনবী(৫০) তিনি একজন কৃষক ওই দিন সন্ধ্যায় কালিগঞ্জ বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলেন হটাৎ তানোর থানার পুলিশের একটি পিকাপ নিয়ে হাজির হন এস আই নজরুল কোনো জিজ্ঞাসা বা প্রশ্ন ছাড়াই সেই কৃষক নুরনবী কে গাড়িতে তুলে নেন এবং থানায় নিয়ে জান পরে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় ততক্ষণে কৃষক নুরনবীর পরিবারে খবর চলে যায়। পরে তানোর থানায় নুরনবীর পরিবারের সদস্য রা উপস্থিত হয়ে এসআই নজরুলকে জিজ্ঞেস করলে উত্তরে এসআই নজরুল উঁর গো মেজাজে বলেন তিনি আ”লীগের বড় নেতা স্থানীয় বিএনপির এক সিনিয়র নেতার চাপ আছে এজন্যই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনি এও বলেন তাকে গ্রেপ্তার না করলে আমার চাকরি থাকবে না।
নুরনবীর পরিবার থেকে বার বার বলা হচ্ছিল তিনি কৃষক তিনি কৃষক কোনো দল করেন না সে এমনকি কোন দলের পথ/পদবী/কর্মী বা সদস্য পদে নাম নাই এটা আপনি যাচাই করে দেখতে পারেন। কিন্তু কে শুনে কার কথা এস আই নজরুলের একি কথা তাকে ছাড়া যাবেনা ছারলে আমার চাকরি থাকবে না। তবে সে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুম দেখিয়ে দেন বলেন ওখানে কথা বলেন, এবার নুরনবীর পরিবারের দুই ছেলে ও এক মিয়ে ওসি সাহেবের কাছে গ্রেপ্তারের
কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওটা চান্দুড়িয়া ইউপির বিষয় ওখানের (বিট অফিসার) এস আই নজরুল তার সাথে কথা বলেন তিনিই ভালো বলতে পারবেন, এবার চললো ওসির রুম ও এস আই এর রুমে চক্কর ততক্ষণে সেই কৃষক নূরনবী থানা হেফাজতে কাস্টরিতে রাত যেখন ১২ ছুই ছুই তখন থানা থেকে বলা হয় তাকে কামারগাঁ ইউপির একটি মামলার অজ্ঞত নামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে আপনারা আদালতে যোগাযোগ করুন বলে ছাপ জানিয়ে দেন এস আই নজরুল।
কৃষক নুরনবীর ছেলে তারিকুল উম্মাহ হাফেজিয়া মহিলা মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা নুরুল ইসলাম তিনি বলেন,আমার বাবা সহ আমার পরিবারে তিন জন পুরুষ মানুষ আমরা কোন দলের সাথে সম্পৃক্ত নয় আমরা শুধু দেশের একজন ভোটার এখন ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থানের আগ পর্যন্ত তানোরের ৭৫% মানুষের মুখে আ”লীগের গুনো গান শুনেছি এমনকি তানোর উপজেলার দুটি পৌরসভা ও সাতটি ইউপিরতে আ”লীগ সহ সংগঠনের প্রায় ৩৫.০০০ হাজরা নেতাকর্মী/সমর্থন থাকতে আমার বাবাকে পুলিশ ধরলো কেন,,,? ধরার কারন হিসাবে অবশ্য নুরুল ইসলাম অকপটে বল্লেন তাদের বাসার পাসে একটা বিএনপির পরিবারের সাথে জমি জমা নিয়ে বিরোধ চলছে বেশ কদিন থেকে। এই সুযোগে চান্দুড়িয়া ইউপির চাঁদা দাবি করা ফেসবুক ভাইরাল সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মফিজের ইন্ধনে তার বাবাকে ধরা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
বর্তমান তানোর থানার পুলিশের কর্মকান্ড নিয়ে সুশীল সমাজের কিছু ব্যক্তির সাথে কথা হলে তারা বলেন, পুলিশ এখনো পরিবর্তন হতে পারেননি এইতো কয়েক মাস আগেই ছাত্র জনতা ও সকল শ্রেণী পেশা মানুষের অংশগ্রহণে দেশ একটি নতুন অধ্যায় পেয়েছে পাশাপাশি স্বাধীনতা পেয়েছে কিন্তু আমাদের তানোর থানা পুলিশের চিত্রটা আগের চেয়ে এখন আরো ভয়াবহ হয়ে গেছে যাকে যেভাবে যে অবস্থায় পাচ্ছে তুলে নিয়ে গিয়ে পরে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে শুধু কিছু কতিপয় মানুষের কথায় এমনকি বিএনপি’র এক শ্রেণীর নেতাদের সাথে যোগ-সাজো সে গ্রেপ্তার
বাণিজ্য চলছে। আসলে যারা এগুলো করছেন সেই পুলিশ কর্মকর্তারা কি একবারও ভাবছেন না
একজন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের নামে মামলা হলে সেই পরিবারের অবস্থাটা কেমন হয় একবারও তারা উপলব্ধি করতে পারে না।
সুশীল সমাজ আরো বলেন, ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনার দোসরদের বিচার বাংলার জনগণ চাই কিন্তু এই বিচারের দায়িত্বটা থাকবে দেশের আইন ও আইনের মানুষের কাছে আর এটাই হওয়া উচিত কিন্তু সরজমিনে দেখা মিলছে দিন দিন তানোর থানার এস আই নজরুলের মত কিছু কর্মকর্তার জন্য আস্থা ফেরার চেয়ে আস্হা হারাচ্ছে বেশি,এমন পুলিশ আমরা চাই না এই ছাত্র সমাজের ত্যাগের বিনিময়ে গড়া স্বাধীন দেশে। পুলিশ বা আইনের চোখে যারা অপরাধী তারা শাস্তি পাক কিন্তু কোনো নির্দোষ মানুষ যাতে অপরাধী না হয় সেই দিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান তানোরের সুশীল সমাজ।
উল্লেখ্য,সারাদেশের ন্যয় তানোরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনা হচ্ছে তবে এই অভিযানে যাতে কোন নির্দোষ বা নিরীহ মানুষ হয়রানি না হয় সেই দিকে খেয়াল রাখার অনুরোধ করেছেন তানোর উপজেলার সচেতন ও সুশীল সমাজের মানুষ।
আরো উল্লেখ্য যে,গত ৫ আগষ্ট সারা দেশের বিভিন্ন থানাসহ সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোতে ছাত্র সমাজ ও সাধারণ জনতা হামলা/ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ চালান, কিন্তু তানোর থানাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি এতেই প্রমাণিত হয়েছে তানোরের মানুষ শান্তি প্রিয় মানুষ এবং আগামীতেও শান্তিপ্রিয় হয়ে থাকতে চাই এজন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন সুশীল সমাজ।