শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক :
সরকার পতনের পর হঠাৎ করেই যেন বেড়ে চলছে সামাজিক অস্থিরতা। রাজনৈতিক সহিংসতার পাশাপাশি দিনদুপুরে ঘটছে ছিনতাই ও নারী হেনস্তার ঘটনা।
অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে নীরব চাঁদাবাজি, দখল। নানা অজুহাতে তৈরি হচ্ছে শ্রমিক অসন্তোষ।
অশান্ত হয়ে উঠছে পাহাড়। মাঝে মাঝেই দেশের বিভিন্ন স্থানে গণপিটুনিতে নির্মম মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা চলছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি মহল বিরামহীনভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে পরিস্থিতি অশান্ত করতে।
পার্শ্ববর্তী একটি দেশ সেটাকে উসকানি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিমত তাদের।
মানবাধিকারকর্মী ও অপরাধ বিশ্লেষক নূর খান বলেন, সাবেক স্বৈরাচার সরকার সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়ে পালিয়েছে। তবে তার অনুচরেরা রয়ে গেছে। তারা এখনো সক্রিয়।
পিটিয়ে মানুষ হত্যা : দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঝে মাঝেই পিটিয়ে মানুষ হত্যার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে ৩৫টি ঘটনায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এদের অনেকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন। এর বাইরে সাম্প্রতিক আলোচিত হত্যাকান্ডের মধ্যে কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকায় অস্ত্র উদ্ধার অভিযানকালে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন নিহত হয়েছেন।
অপরাধ বিশ্লেষক এবং একাধিক সংস্থার কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাঠপর্যায়ে পুলিশের অনুপস্থিতি, সরকার পরিবর্তনের পর পূর্ববিরোধ, দখলবাজি, আইনকে তোয়াক্কা না করা, রাজনৈতিক বিরোধসহ সামাজিক নানান বিরোধের জেরে আরও অনেক কারণে খুনের ঘটনা ঘটছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দুই মাস পূর্ণ হয়েছে ৮ অক্টোবর। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় চাওয়া ছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি। তবে এক্ষেত্রে সরকার প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে পারছেন না বলে মনে করছেন তারা।
সংঘর্ষ ও জামিন নিয়ে শঙ্কিত ব্যবসায়ীরা : গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে রায়েরবাজারে সাদেক খান আড়তের সামনে স্থানীয় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নাসির (৩০) ও মুন্না (২২) নামের দুই যুবক খুন হন। জোড়া খুনের ঘটনায় গত ২২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলায় আসামি হয়েছে। প্রায় দুই যুগ পর জামিনে বের হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলাল। স্থানীয়রা বলছেন, কারাগার থেকে বের হওয়ার পর থেকে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি এলাকায় তার অনুসারীদের আনাগোনা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা। পুলিশ বলছে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এলাকার ‘দখল’ নিতে সন্ত্রাসীদের দুই পক্ষের বিরোধ থেকে জোড়া খুনের ওই ঘটনা ঘটেছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মগবাজারের বিশাল সেন্টারে দলবল নিয়ে মহড়া দিয়েছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন। একটি দোকান দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। পরে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ডেকে কথা বলেছেন। এ নিয়ে সেখানকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।