প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলার চা বাগানে কাজে যোগদেয় শ্রমিকরা। দিনভর পাতাও তুলে তারা। তবে দুপুরের পর চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতাদের আদেশ অমান্য করে একটা অংশ আাবারও মিছিল বের করে। তারা বলেন প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন এটা কোন টেলিভিশনে দেখেনি বা শোনেনি। নেতারা এটি প্রধানমন্ত্রীর নামে মিথ্যে নিদের্শনা দিয়ে আমাদের কাজে যেতে বলছেন। ৩০০ টাকা মজুরির দাবীতে তারা আবারও আন্দোলন শুরু করেন।
এদিকে চলমান আন্দোলন নিরসনে সরকারের জেলা প্রশাসন, শ্রম অধিদপ্তরের এর সাথে দফায় দফায় বৈঠক হয়। কোন বৈঠকেই বিষয়টি সুরাহা না হলে গত শনিবার শ্রীমঙ্গল শ্রম অধিদপ্তরে এক বৈঠকে জানানো হয় বিষটি প্রধানমন্ত্রীর নজরে গেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের বাহিরে যাবেন তিনি বলেছেন বাহির থেকে এসে গণভবনে শ্রমিকদের নিয়ে বসবেন এবং তাদের কথা শুনে তাদের সুযোগ সুবিধার বিষয়টি দেখবেন। এটি প্রথমে চা শ্রমিক নেতারা মানলেও পরে তা প্রত্যাখ্যান করেন। সর্বশেষ রবিবার রাত ৯টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে দীর্ঘ বৈঠক হয়। বৈঠকে জেলা প্রশাসন পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়টি শ্রমিক নেতাদের বলেন। শ্রমিক নেতারা বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা করি।
তবে আমাদের মজুরি ১৪৫ টাকার ঘোষনা আমরা মেনে নিচ্ছিনা। চলমান মজুরিতেই আমরা প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কাজ করে যাবো। পরবর্তী বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী যেন আমাদের মজুরি ৩০০ টাকা করার বিষয়টি দেখেন। চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, আমরা কাজে যোগ দিচ্ছি। আশা প্রকাশ করিছি প্রধানমন্ত্রী আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
(২১ আগস্ট) রবিবার রাতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠকে ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর শ্রীমঙ্গল এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি, সহ সভাপতি পঙ্কজ কন্দ, বালিশিরা ভ্যালীর সভাপতি বিজয় হাজরা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল, কমলচন্দ্র ব্যানার্জিসহ চা শ্রমিক ইউনিয়নের অনান্য নেতৃবৃন্দ।
(২১ আগস্ট) রবিবার দুপুরে সরজমিনে শ্রীমঙ্গল ভুরভুড়িয়া চা বাগানের একটি সেকশনে দেখা যায়, চা শ্রমিকরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে কাজ করছেন। চা শ্রমিক অঞ্জনা রানী জানান, বেতন কতো পাবো জানিনা প্রধানমন্ত্রী আমাদের কাজে যোগ দিতে বলেছেন আমরা কাজে যোগ দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই বিষয়টি দেখবেন।
এদিকে এই দাবীকে না মেনে একটি অংশ জেলার বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনে নামে তারা ৩শ টাকা মজুরি দাবী করে। শ্রীমঙ্গল খাইছড়া চা বাগানের শ্রমিক সন্তান রাঘব গোয়ালা জানান, ৩শটাকা মজুরি দেয়ার কথা বলে আমাদের আন্দোলনে নামিয়েছে। এখন ১২০ টাকা মজুরিতেই আবার কাজে যাবো এটা কেমন কথা। তাহলে মিছিল করলাম কেন। আন্দোলন করলাম কেন। এ সময় একই বাগানের দিলীপ ভুইয়া জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা আমরা নিজের কানে শোনলে আন্দোলন থেকে সরে আসবো না হয় তিনশ টাকা দিলে আন্দোলন থেকে সরবো।
এছাড়াও শ্রীমঙ্গলের লছনা এলাকায় ঢাকা মৌলভীবাজার সড়কে, শ্রীমঙ্গল লেবার হাউজের সামনে ও কমলগঞ্জের সমশের নগরসহ বিভিন্ন চা বাগানে ৩০০ টাকা মজুরির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে শ্রমিকরা।মিছিলে অংশনেয়া শ্রীমঙ্গল কালিঘাট চা বাগানের অবান তাঁতী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা আমরা সরাসরি শুনিনি। এটা নেতাদের ভাওতাভাজি। আমরা মজুরী ৩শ টাকা চাই।