সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৯ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি:
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, বার্তা প্রধান : মোহাম্মদ আসিফ খোন্দকার, আইনবিষয়ক সম্পাদক: অ্যাডভোকেট ইলিয়াস , যোগাযোগ : ০১৬১৬৫৮৮০৮০,০১৮১১৫৮৮০৮০, ঢাকা অফিস: ৪৩, শহীদ নজরুল ইসলাম রোড, চৌধুরী মল (৫ম তলা), টিকাটুলি ১২০৩ ঢাকা, ঢাকা বিভাগ, বাংলাদেশ মেইল: bdprotidinkhabor@gmail.com চট্টগ্রাম অফিস: পিআইবি৭১ টাওয়ার , বড়পুল , চট্টগ্রাম।
সংবাদ শিরোনাম:
২০ জানুয়ারি থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু ইসি নতুন অনুপ্রবেশ করা ৫০-৬০ হাজার রোহিঙ্গারা মানবিক সমস্যায় পরে এসেছেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মাতামুহুরী নদীতে গোসলে নেমে নারী শিক্ষার্থী নিখোঁজ সরকার বা আদালত নিষিদ্ধ না করলে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই আওয়ামী লীগের: সিইসি আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে: জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান টেকনাফে পাহাড় থেকে বনকর্মীসহ ১৯ শ্রমিক অপহৃত, উদ্ধারে চলছে যৌথ অভিযান চা খাওয়ানোর কথা বলে শিশুকে অপহরণ, রোহিঙ্গা কিশোর গ্রেপ্তার চকরিয়ায় ছড়াখালের পানিতে ডুবে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চকরিয়া বছরজুড়ে নিত্যপণ্যের দামে নৈরাজ্য, সিন্ডিকেট দমনে ব্যর্থ সব পক্ষ উখিয়ায় বন বিভাগের অভিযানমাটিভর্তি ডাম্পার জব্দ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ২২ লাখ টাকার ‘ভুতুড়ে ব্যয়’

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে জাঁকজমক অনুষ্ঠান করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ২৬ মার্চ দিনে র‍্যালি করে প্রশাসন। সঙ্গে আলোচনাসভা করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া হয় সম্মাননা। রাতে হয় ‘সুবর্ণ জয়ন্তী কনসার্ট’।

এই অয়োজনে ভুতুড়ে ব্যয় করা হয়েছে। যা দেখে চমকে যাচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাদের ভাষ্য- এই ব্যয় সামঞ্জস্যহীন এবং অযৌক্তিক। পরিকল্পনার চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে ধারণা করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এটাই স্বাভাবিক খরচ।

এরই মধ্যে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানের ব্যয়ের নথির একটি অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিষয়টি শেয়ার করে প্রশ্ন তুলেছেন।

এই নথিতে দেখা গেছে, শুধু ২৬ মার্চের প্রগ্রামের মোট খরচ দেখানো হয়েছে ২২ লাখ টাকা। মোট ৯টি খাতে এই ব্যয় করেছে প্রশাসন। তবে এটি ব্যয়ের পরিকল্পনা নথি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও দিবস উদযাপন কমিটির সদস্যসচিব ড. রবিউল ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি জানান, খরচের হিসাব এখনো পূর্ণাজ্ঞ করা হয়নি। এতে এক মাস সময় লেগে যাবে।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসাবরক্ষক ফরিদুল আলম এই অনুষ্ঠান বাবদ ২২ লাখ টাকার অনুমোদন দিয়ে উত্তোলন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। তবে কোন সভায় এই বরাদ্দ পাস হয়েছে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মনে নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই খরচ আমার কাছে অসামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হচ্ছে না। আমার কাছে খরচের রসিদ এখনো আসেনি। ‘

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৬ মার্চ ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাদের প্রত্যেককে একটি সম্মাননা স্মারক ও উত্তরীয় এবং তিনটি করে বই দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। যাতে প্রত্যেক বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে বরাদ্দ করা হয়।

আপ্যায়নে দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয় ধরেছে সংশ্লিষ্টরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৬ মার্চ দুপুরে এক হাজার ৫০০ প্যাকেট খাবার কিনেছে কমিটি। সেই হিসাবে প্রতি প্যাকেটে বরাদ্দ ছিল ১৮০ টাকা।

এ ছাড়াও ওই দিন সকাল ১০টায় র‍্যালি বের করে প্রশাসন। র‍্যালিটি ১২০ সেকেন্ড (দুই মিনিট) প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই দুই মিনিটের র‍্যালিতে ব্যয় ধরা হয় এক লাখ ২০ হাজার টাকা। যেখানে একটি ব্যানার, কয়েকটি লাল-সবুজ ছাতা দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয় বেদিতে।

মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আড়াই লাখ টাকা খরচ করলেও সেই আলোচনাসভা এবং সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের মঞ্চ তৈরি করতে তিন লাখ টাকা খরচ করেছে প্রশাসন। সেই মঞ্চ ও প্যান্ডেল সাজসজ্জাসহ বিভিন্ন ধরনের লাইটিংয়ে চার লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে। সাউন্ড সিস্টেমে এক লাখ ৮০ হাজার, এলইডি এবং ভিডিও খাতে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। রাতে সেই মঞ্চ ও প্যান্ডেলে কনসার্টের আয়োজন করে কর্তৃপক্ষ। কনসার্ট বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে চার লাখ ২০ হাজার টাকা। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানের শৃঙ্খলায় ৬০ হাজার টাকা ব্যয় করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এই ব্যয়কে সরাসরি অযৌক্তিক উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেছেন, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজনে যে ব্যয় বরাদ্দ হয়েছে, তা অবশ্যই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা। অনুমান করি, এই টাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় অনুষ্ঠানসমূহ আয়োজনে সারা বছরের জন্য যে বরাদ্দ থাকে তার দ্বিগুণ। তাহলে বাকি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলো কোন খাত থেকে, সে প্রশ্ন উঠতেই পারে। এই ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। বছরের পর বছর ধরে এমন বরাদ্দের অতিরিক্ত ব্যয় চলছে- এরও সুরাহা প্রয়োজন।

ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি গৌর চাঁদ ঠাকুর বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে যদি ২২ লাখ টাকা খরচ করা হয় তাহলে মৌলিক চাহিদা পূরণের সময় তারা অর্থ সংকট দেখায় কিভাবে? এত ব্যয়ের সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত। ‘

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান এ বিষয়ে বলেন, ‘কোন খাতে কত টাকা ব্যয় হয়েছে তা আমি এখনো দেখিনি। তবে এ ব্যয় অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আর যারা সমালোচনা করছেন তারা কিভাবে বুঝবেন একটা প্রগ্রামের আয়োজনে কত টাকা লাগে। ‘

 

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Design & Development BY ThemeNeed.Com