রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫০ অপরাহ্ন
চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরে জমি কেনাবেচার প্রলোভন দেখিয়ে এক ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে ২৫ লাখ টাকার বেশি আদায়ের অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
কয়েকদিন ধরে নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণা করা কামরুল হাসান, আব্দুল্লাহ আল মোমিন, মনিরুল আলম, মো. পারভেজ, রিয়াদুল মাওলা এবং ব্যবসায়ীর সহযোগী পরিচয়ে চক্রে যুক্ত হওয়া ইমাম হাসান ওরফে রাসেল।
হালিশহর থানার অপারেশন অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন জানান, গত ৮ নভেম্বর জমি কেনাবেচার আলাপে বউবাজার এলাকার একটি ভবনে ব্যবসায়ীকে ডেকে নেয় প্রতারক চক্র।
সেখানে তাকে আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে নগদ ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ২৫ লাখ ১০ হাজার টাকা আদায় করা হয়। পরে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তিন দফা অভিযান চালায়। প্রথম ধাপে পাঁচজন, পরবর্তীতে ১৮ নভেম্বর রাসেল এবং সর্বশেষ ২১ নভেম্বর রাতে প্রধান অভিযুক্ত কামরুল হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা এবং কয়েকটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। আদালতে নেওয়ার পর তিনজন—আব্দুল্লাহ আল মোমিন, মনিরুল আলম ও মো. পারভেজ—১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতে উঠে আসে, ব্যবসায়ী রিদুয়ান সরকারের ঘনিষ্ঠ পরিচয় ব্যবহার করে রাসেলই তাকে প্রতারকদের হাতে তুলে দেয়।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে রাসেলকে সামান্য মারধর করে তার কাছ থেকেও ৭ হাজার টাকা নেওয়া হয়। পরে চাঁদার টাকা পেলে সেই টাকা ফেরত দেওয়া হয় এবং ভাগ হিসেবে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
এসআই মোশারফ হোসেন বলেন, গ্রেপ্তারদের ব্যাংক হিসাবেও লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে বাকি অর্থ কার কাছে আছে এবং চক্রটির সঙ্গে আর কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হবে। পুলিশের ধারণা, অভিযুক্ত চক্রটির সঙ্গে আরও কয়েকজন সক্রিয় রয়েছে। তদন্তে নতুন তথ্য পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তার কামরুল হাসান দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিলেন। দ্রুত বিচার আইন, চাঁদাবাজি, প্রতারণা ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনসহ বিভিন্ন ধারায় তার বিরুদ্ধে অন্তত পাঁচটি মামলা রয়েছে।