সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:০০ অপরাহ্ন
মোঃ সেলিম উদ্দিন খাঁন বিশেষ প্রতিনিধি:
হত্যার চার মাসের মধ্যেই পুলিশ তদন্ত শেষ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী। তিনি রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারায় মধ্যরাতে ডাকাত প্রতিরোধে যৌথবাহিনীর অভিযানে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে নিহত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. তানজিম ছারোয়ার নির্জন (২৩) হত্যার ঘটনায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ।হত্যার চার মাসের মধ্যেই পুলিশ তদন্ত শেষ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী।
তিনি রবিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।চকরিয়া আদালতে কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক (কোর্ট ইন্সপেক্টর) মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে পুলিশ ১৮ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধেই তদন্তকারী কর্মকর্তা রবিবার আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন।
অভিযোগপত্রে নাম থাকা ১৮ আসামির মধ্যে ১২ আসামি ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারান্তরীণ ও ৬ আসামি পলাতক রয়েছেন। কোর্ট ইন্সপেক্টর আরও জানান, সেনা কর্মকর্তা তানজিম ছারোয়ার নির্জন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ডাকাতির প্রস্তুতিসহ হত্যা ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা রুজু হয়েছিল থানায়। দুই মামলাতেই ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
তন্মধ্যে পলাতক ৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি ও মালামাল ক্রোকি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী জানান, সেনা কর্মকর্তা তানজিম ছারোয়ার নির্জন হত্যাকাণ্ড ও ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধারের ঘটনায় থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়েছিল। তন্মধ্যে ডাকাতির প্রস্তুতিসহ সেনা কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবদুল্লাহ আল হারুণুর রশীদ বাদী হয়ে ১৭ জনের নামোল্লেখ করে মামলা করেন। একইসঙ্গে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলমগীর বাদী হয়ে একই আসামীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও জানান, সেনা কর্মকর্তা হত্যায় যে ১৭ জনের নামে মামলা হলেও সেখান থেকে এই হত্যাকাণ্ডে ৬ জনের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে অভিযোগপত্র থেকে। তদন্তে বের হয়ে আসে এজাহারের বাইরে থাকা আরও ৭ জনের নাম।
নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করে সর্বমোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতিসহ হত্যা ও অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া পৃথক মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের বসতবাড়িতে সশস্ত্র ডাকাত প্রতিরোধ অভিযানে গিয়ে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম সারোয়ার নির্জন নিহত হন।
এসময় যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থল থেকে তিন ডাকাতকে আটক এবং তাদের ফেলে যাওয়া দেশে তৈরি একটি বন্দুক, ছয়টি গুলিও উদ্ধার করে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লেফটেন্যান্ট তানজিমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
লেফটেন্যান্ট তানজিমের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। তিনি ৮২তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে ২০২২ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে আর্মি সার্ভিস কোরে (এএসসি) কমিশন লাভ করেন।