রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৮ অপরাহ্ন
মোঃ সেলিম উদ্দিন চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম দক্ষিণ চুনতি রেঞ্জের সাতগড় বন বিট কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, রক্ষক যখন ভক্ষক, রফিকুল ইসলাম বিট অফিসার হিসেবে যোগদানের পর থেকেই স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানান অভিযোগএসব বন বিভাগের সফলতা ও ব্যর্থতার দায় দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে তার উপরেই বর্তায়।
বন বিভাগের মূল কাজ বন-বাগান সৃজন, বন রক্ষা। কিন্তু এই বন সংরক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিটি স্তরে অনিয়ম-দুর্নীতি, কাঠ পাচার, পাচারকৃত কাঠ উদ্ধারে চরম অবহেলা ও ব্যর্থতার অভিযোগের তথ্য-এসেছে গণমাধ্যমের হাতে ।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের চুনতি রেঞ্জের সাতগড় বনবিটের ১০০ গজের মধ্যেই সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ৩০ বছরের প্রাচীন দুই শতাধিক সেগুন ও আকাশমনি গাছ কেটে সাবাড় করার অভিযোগ উঠেছে।
বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে একটি চিহ্নিত প্রভাবশালী চক্র এ অপকর্মে জড়িত বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের পাশেই চুনতি রেঞ্জের সাতগড় বন বিট কর্মকর্তার কার্যালয়ের সীমানা ঘেঁষে পেরইত্যাঘোনাও পার্শ্ববর্তী আলতাফের জুম এলাকায় ১৯৯৭ সালে সৃজিত সেগুন ও আকাশমণি বাগান রয়েছে।
ওই বাগানগুলো থেকে সাতগড় বনবিট কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সহযোগিতায় বিগত ১ সপ্তাহ ধরে গাছ কাটা হচ্ছে। স্হানীয় একটি চিহ্নিত সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে এসব বনের গাছ লুট হচ্ছে বলে জানা গেছে।
যে সিন্ডিকেটের সঙ্গে বন কর্মকর্তাদের প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত বৈঠক চলে বলেও একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এ নিয়ে স্থানীয় লোকজন বন বিভাগে গাছ উজাড়ের তথ্য দিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগী একজন বলেন, গাছ কাটার বিষয়টি বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানানো হলে এই তথ্য গাছ লুটকারীদের কাছে বিদ্যুৎগতিতে বন বিভাগের বিশেষ সোর্সের মাধ্যমে পৌঁছে যায়।
তিনি নিজেও এসব সিন্ডিকেটের সঙ্গে গাছ ব্যবসায় জড়িত রয়েছেন। গাছ পাচারে ব্যবহৃত দুটি জিপ গাড়িতে তার অংশীদারি বিনিয়োগ রয়েছে বলেও জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাতগড় বনবিটে রফিকুল ইসলাম বিট অফিসার হিসেবে যোগদানের পর থেকেই স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানা অনিয়মে জড়িত।
তাকে টাকা দিলেই মেলে সবকিছুর অনুমোদন। টাকার বিনিময়ে বনের বাগানের গাছ কেটে আন্তঃফসলের সুযোগ ও বসতবাড়ি নির্মাণের সুযোগ করে দেন তিনি।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, বিট অফিসারের সঙ্গে চোরাকারবারিদের যোগসাজশ রয়েছে।
তাকে ম্যানেজ করা হলে তিনি সেদিন আর বিট অফিসের এলাকায় থাকেন না, অন্যত্র চলে যান।
সাতগড় বন বিট কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তবে গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, বন থাকলে তো গাছ কাটবেই, আমার অফিসের কাছ থেকে বন বিভাগের কিছু গাছ কাটা গেছে।
এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত তথ্যের জন্য রেঞ্জ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে মোবাইল সংযোগ কেটে দেন।
জানতে চাইলে চুনতি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি।গাছ কেটেছে শুনেছি, তবে বিস্তারিত আমার জানা নেই।
বন বিভাগের চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) ড.রেজাউল করিমের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি তিনি।