বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৫ পূর্বাহ্ন
উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁঃ
বাংলা ভাষার খ্যাতিমান বিশিষ্ট কবি ও সম্পাদক যতীন্দ্রমোহন বাগচীর প্রয়াণ দিবসে তাঁর স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই,মাগো আমার শোলক্-বলা কাজলা দিদি কই?পুকুর ধারে লেবুর তলে,থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে,ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, একলা জেগে রই,
মাগো আমার কোলের কাছে কাজলা দিদি কই?”
যতীন্দ্রমোহন বাগচী ১৮৭৮ সালের ২৭শে নভেম্বর নদিয়ার জমসেদপুরে জন্মগ্রহণ করেন।কলকাতার ডাফ কলেজ (বর্তমানে স্কটিশ চার্চ কলেজ) থেকে তিনি স্নাতক পাশ করেন। বিভিন্ন সাহিত্য সাময়িকীতে তিনি নিয়মিতি লেখালেখি করতেন।১৯০৯ থেকে নিয়ে ১৯১৩ সাল পর্যন্ত তিনি সাহিত্য পত্রিকা মানসী-র সম্পাদনায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯২১ থেকে নিয়ে বছরখানেক তিনি অপর এক সাহিত্য সাময়িকী যমুনা-র যুগ্ম সম্পাদক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৭-৪৮ সালে তিনি নিজস্ব পত্রিকা পূর্বাচল চালু করেন এবং এর সম্পাদনার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন।রবীন্দ্র সমকালীন অনেক কবির মতোই তাঁর কাব্যের বিষয়বস্তু পল্লীজীবন থেকে সংগৃহিত | পল্লীপ্রকৃতির
সৌন্দর্য, নাগরিক জীবনের তুলনায় তার সরলতা ও স্বাভাবিকতা, রোম্যান্টিক আদর্শবাদ, মানুষের দুঃখ-দৈন্যেরজন্য, বিশেষ করে পীড়িতা নারীর জন্য ব্যথা তাঁর কাব্যের মূল প্রেরণা |
“আধুনিক” কবিসমাজের সঙ্গে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির ঐক্য না থাকলেও, তাঁর প্রকাশভঙ্গির ক্ষেত্রে যে সজীবতা ও নতুনত্ব সৃষ্টি করেছিলেন সেখানে তিনি “আধুনিক” কবিদের নিকটবর্তী |তাঁর কবিতা “কাজলা দিদি” যা পরে প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে একটি অতি জনপ্রিয় গান হয়ে বাঙালীর
মনের গভীরে প্রবেশ করেছিল |
তাঁর “অপরাজিতা” কবিতাটিও জনপ্রিয় কবিতার মধ্যে অন্যতম |তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ “লেখা” (১৯০৬) | অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে “রেখা” (১৯১০),”অপরাজিতা” (১৯১৩), “নাগকেশর” (১৯১৭), “বন্ধুর দান” (১৯১৭), “জাগরণী” (১৯২২), “নীহারিকা” (১৯২৭), “মহাভারতী” (১৯৩৬) প্রভৃতি | এ ছাড়া রচনা করেছেন “পথের সাথী” নামক উপন্যাস এবং “রবীন্দ্রনাথ ও যুগসাহিত্য
“(১৯৪৭) নামক স্মৃতিচিত্র |১৯৪৮ সালের ১লা ফেব্রুয়ারী যতীন্দ্রমোহন বাগচী মৃত্যুবরণ করেন।