রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৭ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি,মোঃ সেলিম উদ্দিন
গ্যাস সংকটে বড় বিপর্যয়ের মুখে চট্টগ্রাম। আবাসিক থেকে বাণিজ্যিক খাতে গ্যাসের সরবরাহ হঠাৎ বন্ধ হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। মূলত কক্সবাজারের মহেশখালীতে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) টার্মিনালে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা থেকে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে চট্টগ্রামজুড়ে গ্যাস সংকটে হাহাকার তৈরি হয়। রান্না করতে না পারায় অনেকে দোকান থেকে শুকনো খাবার কিনে দিন পার করছেন। হোটেলেও দীর্ঘ লাইন ধরে লোকজনকে খাবার সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) বিপণন বিভাগের উপ মহাব্যবস্থাপক (দক্ষিণ) প্রকৌশলী অনুপম দত্ত জানান, কক্সবাজারের মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনালে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে। যার ফলে চট্টগ্রামে এর প্রভাব পড়েছে। দ্রুত ত্রুটি সারিয়ে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। আশাকরি দ্রুত সমাধান হবে।
এদিকে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল এক প্রকার বন্ধ রয়েছে নগরীতে। কিছু সংখ্যক অটোরিকশা চলাচল করলেও দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
কেজিডিসিএল’র সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল ছাড়া বিকল্প কোনো উৎস থেকে গ্যাস সরবরাহের সুযোগ না রাখায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভাসমান দুটি টার্মিনাল থেকে পাওয়া প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস নিয়মিত গ্রাহকদের সরবরাহ করে থাকে কেজিডিসিএল। কিন্তু সেই উৎস থেকে গ্যাসের সরবরাহ না পাওয়ায় এক ধরনের বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে চট্টগ্রাবাসীকে।
গত অক্টোবরে একটি টার্মিনাল জরুরি সংস্কারের জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যার ফলে গত তিনমাসেরও বেশিসময় ধরে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ প্রায় অর্ধেক ছিল। ১৭ জানুয়ারি সেটি ফেরত এসেছে। সেটি পুনঃস্থাপন করতে গিয়ে যান্ত্রিক ত্রুটি সৃষ্টি হওয়ায় সরবরাহে বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।
কেজিডিসিএল’র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্রাহক হিসেবে বিবেচনা করা হয় শিকলবাহা বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড ও কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানিকে। এ তিনটি খাতে গ্যাসের প্রয়োজন প্রায় ১২০ থেকে ১২৫ মিলিয়ন ঘনফুট। আর
১৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস গৃহস্থালি ও শিল্পখাতে সরবরাহ করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে গৃহস্থালির পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্র, সার কারখানা, শিল্প কারখানা, সিএনজি স্টেশন, হোটেল-রেস্টুরেন্টেও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে।