রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৮ অপরাহ্ন
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ময়নাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এখন মাত্র জরাজীর্ণ ভন্ধুর দশা কালের সাক্ষী। একজন মাত্র ২য় শেণীতে পড়–য়া শিক্ষার্থী তিনজন শিক্ষক নিয়ে কোনো রকম চলছে নামে মাত্র স্কুলটি। বর্ষার মৌসুমে পানি জমে তলিয়ে যায় জঙ পরা জীর্ণসির্ন ছিদ্র টিনের চাল মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্কুলটি অথচ নেই স্কুলের ক্লাস শুরু হওয়ার ব্যাস্ততা নেই ছোট ছোট সোনা মনিদের স্কুলের মাঠ জুড়ে দূরান্ত পনা ছটাছুটি খেলাধুলায় মুখরিত পরনের জামা কাপড়ে মাখেনা মাঠের ধুলো বালি।
ক্লাস শুরু হওয়ার পূর্বে মাঠ জুড়ে শিক্ষার্থীদের সারিবদ্ধ লাইনে দাঁড়িয়ে এ্যসেমবিø। শোনা যায়না সমবেত কণ্ঠে কবিগুরু রবি ঠাকুরের জাতীয় সংঙ্গীত। প্রতিদিন মাত্র ১জন শিক্ষার্থী নিয়ে আমরা তিনজন শিক্ষক স্কুলের একটি একই জায়গায় সীমাবদ্ধ মাত্র ২ থেকে ৩ ঘণ্টায় পরি সমাপ্ত বাকী সব ক্লাস রুমগুলো আজ বহুকাল যাবৎ শিক্ষার্থীর অভাবে শূন্য পরিত্যাক্ত কোনো স্মৃতি চারন ভুল হবেনা।
শিক্ষার্থী শূন্য প্রাণহীন কাঠামো নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ময়নাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে আমাদের তিনজন শিক্ষকদের মনের প্রফুল্লতা আসেনা তেমন একটি মাত্র দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে আমরা যতোই মাতৃ ¯েœহে পাশে বসিয়ে ¯েœহ মমতা দিয়ে পাঠ মুখস্ত করাইনা কেনো তাতে একা একা একটি শিশুর সমবয়সী পড়ার সাথী ছাড়া মন বসেনা পাঠ্য পুস্তকে বলে জানান বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপ্না রানি।
অপর দিকে একমাত্র শিক্ষার্থী প্রতিদিন একই বেে তিনজন শিক্ষকের সম্মুখই তার শিক্ষা জীবনে গÐিভুত নেই খেলার সাথী মাঠ জুঁড়ে দৌড়া দৌড়ি দূরান্তপানা প্রতিদিন নিত্য নতুন খেলার আয়োজন ক্লাস শুরু হয়ে যাওয়ার ঘণ্টা বাজার নাই কোনো তারাহুরো। সবই যেন নূন ছাড়া পান্তা, রুটির স্বাদের স্কুল শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতিযোগীতার কোনো বালাই নাই কারণ ১ জন মাত্র শিক্ষার্থী প্রথম হলেও সেই দ্বিতীয় আর তৃতীয় একই কথা।
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার শেষ প্রান্তে ময়নাপুর গ্রাম হাওড়ের মধ্যে একটি দ্বীপ চারিদিকে পানি এখানে মাত্র ৪৬টি পরিবারের বাস আর ময়নাপুর গ্রামের সবকয়টি পরিবার হিন্দু সম্প্রদয়ের উল্লেখিত এলাকার বাসিন্দা তাপস কুমার মন্ডলের দান কৃত ৩৭ শতক জমিতে ময়নাপুর স্কুলটি নির্মিত হয়েছিলো।
১৯৯১ সালে ২০১৩ সালে সরকারী করন হয়েছে। যেটা এখন ময়নাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে পরিচিত। স্কুল শুরুতে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন তাপস কুমার মন্ডল নিজেই আর তখন স্কুলটিতে ৬০ থেকে ৬৫ জন শিক্ষার্থী শিক্ষাগ্রহণ করার জন্য আসতো কিন্তু পর্যায়ক্রমে সেই সকল শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিকের গÐি পেরিয়ে উচ্চাশিক্ষার জন্য শহর মুখি হয়েছে।
আর তার পর থেকেই হ্রাস পেতে শুরু হয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা এখন সেই সংখ্যায় দাঁড়িয়েছে মাত্র দ্বিতীয় শেণীতে পড়–য়া ১ জন শিক্ষার্থী বলে জানান ডুমুরিয়া উপজেলার শিক্ষা অফিসার সিকদার আতিকুর রহমান তিনি আরো বলেন আমার শিক্ষাজীবন থেকে শুরু করে চাকরি জীবনের এই সময় পর্যন্ত এহেন ঘটনা সমোচিন অপ্রতুল একটি দীর্ঘ দিনের পুরাতন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র ১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে তিন জন শিক্ষক দ্বারা স্কুল চলে এটা আমার বোধগম্য হয়না। এটা বিড়ল ঘটনা দিন হলো আরো চারজন শিক্ষার্থী এসেছে যাদের জন্ম সনদ না থাকার কারণে স্কুলে ভর্তি করতেও না পারলেও তাদের স্কুলে আসার সুযোগ দেওয়া হয়েছে যাতে করে কিছুৃটা হলেও স্কুলটির প্রাণ ফিরে পাক সেই চেষ্টা সর্বদা আমাদের।
আবার এলাকার তথ্য সূত্রে জানাযায় এখানে একেতো জন সংখ্যা খুবই সীমিত তারপর আবার গত ছয় বছরে এলাকায় মাত্র ৪ জন শিশুর জন্ম হয়েছে। তারা এখনো স্কুলে আসার উপযোগী বয়সে পদার্পন করেনি তাছাড়া বেশ আগে পাশের গ্রামের কিছু শিক্ষার্থীদের এলাকা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহযোগীতায় ধান, চাল খাদ্য সামগ্রীর মাধ্যমে ছাত্র সংগ্রহ করা হতো। তাও এখন তেমন কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহযোগীতা না থাকার কারণে দুরবর্তি এলাকার ছাত্ররাও ময়নাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আসেনা বলে এলাকাবাসী জানান।
তারপর আবার ময়নাপুর গ্রামের ১৮টি পরিবার গত কয়েক বছর আগে ভারতে চলে যাওয়ার কারণে গ্রামটি আরো জনশূন্য হয়ে পড়ায় শিক্ষার্থী সংকট আরো বেড়েছে। তবে ময়নাপুর গ্রামের দ্বীপের মাঝ দিয়ে অন্যত্র যাওয়া আসার সুবিধার্থে গ্রাম বাসীর নিজ উদ্যোগে একটি ভেড়িবাঁধ তৈরির কাজ চলছে।এদিকে আবার স্কুলটি এহেন বেহার দশার কথা চিন্তা করেন। শিক্ষা অফিসার জানিয়েছে জায়গাটি খুবই দূর্গম মাঝে মাঝেই পানি ওঠে। তাই অনেকেই এলাকা ছেড়ে স্থানান্তর হচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন স্কুলটির অবস্তান ডুমুরিয়ার একেবারে শেষ প্রান্তে পাশ্ববর্ত্তী জেলা যশোরের কেশবপুর লাগোয়া তাই আমরা এখন প্রস্তাব পাঠিয়েছি স্কুলটি বন্ধ করে কেশবপুরের একটি স্কুলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী স্থানান্তরের প্রস্তাবটি হলে।