বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি,মোহাম্মদ তাহসিন:
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অধীনে বিগত এক দশকে বাস্তবায়িত এবং চলমান ২০ হাজার কোটি টাকার ১৩টি মেগা প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গ্রহণ করা এই প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
গত শনিবার পাঁচ সদস্যের এই কমিটি সিডিএ কার্যালয়ে এসে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছে এবং পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু করেছে।
তদন্তাধীন প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে—লালখান বাজার-পতেঙ্গা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার, মুরাদপুর ফ্লাইওভার, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প, সিটি আউটার রিং রোড এবং বায়েজিদ লিংক রোডসহ আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত সচিব কামাল উদ্দিন জানান, ‘আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রকল্প পরিচালকদের কাছ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি প্রকল্প এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। তদন্ত এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে অগ্রগতি হলে বিস্তারিত জানানো হবে।’
মূলপাতামহানগর চট্টগ্রামচট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
সিডিএর ২০ হাজার কোটির ১৩ মেগা প্রকল্পে দুর্নীতির খোঁজে গণপূর্ত
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে আউটার রিং রোড
নিজস্ব প্রতিবেদক ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ৭:৪০ অপরাহ্ন
শেয়ার
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অধীনে বিগত এক দশকে বাস্তবায়িত এবং চলমান ২০ হাজার কোটি টাকার ১৩টি মেগা প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গ্রহণ করা এই প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
গত শনিবার পাঁচ সদস্যের এই কমিটি সিডিএ কার্যালয়ে এসে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছে এবং পরিদর্শন কার্যক্রম শুরু করেছে।
তদন্তাধীন প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে—লালখান বাজার-পতেঙ্গা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার, মুরাদপুর ফ্লাইওভার, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প, সিটি আউটার রিং রোড এবং বায়েজিদ লিংক রোডসহ আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত সচিব কামাল উদ্দিন জানান, ‘আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রকল্প পরিচালকদের কাছ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি প্রকল্প এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। তদন্ত এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে অগ্রগতি হলে বিস্তারিত জানানো হবে।’
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সিডিএ চেয়ারম্যান পদে প্রকৌশলীদের বদলে দলীয় নেতাদের নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়। সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের সময়ে বেশিরভাগ প্রকল্প অনুমোদন ও শুরু হয়। যদিও পরে দুই চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ ও মোহাম্মদ ইউনুসের সময়ে নতুন প্রকল্প গ্রহণ না হলেও, আগের প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ করা হয়।
তদন্তে দেখা হচ্ছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় কোন প্রক্রিয়ায় ঠিকাদার নির্বাচন করা হয়েছে, কারা প্রকল্পগুলোর পেছনে প্রভাব বিস্তার করেছে এবং কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়েছে কিনা।
এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প ও বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার প্রকল্প নিয়েও নানা সময়ে সমালোচনা হয়েছে। ঠিকাদারদের কার্যক্রম, নির্মাণসামগ্রীর মান এবং সময়মতো কাজ শেষ না হওয়া এসব প্রকল্পে বারবার প্রশ্ন উঠেছে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় গঠিত এই তদন্ত কমিটি প্রকল্পগুলোর অনিয়ম চিহ্নিত করতে কারিগরি বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেবে। মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে দুই মাসের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
এই তদন্তে শুধু প্রকল্পের ব্যয় ও বাস্তবায়ন নয়, এর পেছনের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব, কার্যকারিতা এবং জনকল্যাণে প্রকল্পগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হবে।
নগরবাসী এখন এ তদন্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তারা আশা করছে, প্রকল্পগুলোর অনিয়ম ও দুর্নীতি উন্মোচিত হলে নগর উন্নয়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নতুন পথ তৈরি হবে।