শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন
মোঃ সেলিম উদ্দিন খাঁন চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
বিষাদ-আনন্দ এক করে দেবী দুর্গার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।
আগামী বছরের অপেক্ষায় থেকে দুর্গতিনাশিনী দেবীকে দেবালয়ে বিদায় জানালেন ভুবনের বাসিন্দারা সৈকতে লাখো ভক্তের চোখের জলে সাগরে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। সৈকতে আজ ঢাকের তালে উৎসবের আমেজ যেমন ছিল, তেমনি ছিল দেবীকে বিদায় জানানোর বেদনা।
রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুর থেকে পতেঙ্গা সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়।তেল-সিঁদুর পরিয়ে, পান, মিষ্টি মুখে দিয়ে দেবীকে বিদায় জানাতে সৈকতে ভিড় করেন ভক্ত ও অনুরাগীরা।
নানা ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান মিলনমেলায় পরিণত হয়।এর আগে তিথির কারণে শনিবার একই দিনে মহানবমী ও বিজয়া দশমীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ৬টা ১২ মিনিটের মধ্যে প্রথমে মহানবমীর কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা হয়। ওই পূজা শেষেই দশমীর লগ্ন হওয়ায় সকাল ৮টা ২৬ মিনিটের মধ্যে করা হয় বিজয়া দশমী বিহিত পূজা ও দেবীর দর্পণ বিসর্জন।
তবে শনিবার নবমীর দিন হওয়ায় আজ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে ছাড়াও পাথরঘাটা গঙ্গাবাড়ি এলাকায় কর্ণফুলীতে, কালুরঘাট এলাকায়, কাট্টলী রানী রাসমনি ঘাটেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকত সহ চট্টগ্রাম জেলা বিভিন্ন উপজেলায় নদী বা পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে প্রতিমা।সনাতন ধর্ম মতে, আজ দশভুজা দেবী দুর্গা মর্ত্যলোক ছেড়ে স্বর্গশিখর কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে গেলেন।
তবে আবারও ভক্তদের কাছে দিয়ে গেলেন আগামী বছর ফিরে আসার অঙ্গীকার। তাই আবারও মর্ত্যলোকে ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় ভক্তরা চোখের জলে দেবীকে বিদায় জানান। মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক অর্পণ কান্তি ব্যানার্জি বলেন, বেলা ১২ থেকে পতেঙ্গা সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়েছে। ১৬ থানার তিন শতাধিক প্রতিমা এখানে বিসর্জন হবে। আশাকরি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব প্রতিমা বিসর্জন সম্ভব হবে।
পতেঙ্গা সৈকতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসন প্রতিমা বিসর্জনে সহায়তা করছে।এ বছর চট্টগ্রামে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২ হাজার ৪৫৮টি মণ্ডপে। এর মধ্যে মহানগরে ২৯৩টি ও জেলার ১৫টি উপজেলায় পূজামণ্ডপ রয়েছে ২ হাজার ১৬৫টি। জেলার ১৫টি উপজেলায় ২ হাজার ১৬৫টি মণ্ডপের মধ্যে প্রতীমা পূজা ১ হাজার ৫৯৪টি বাকিগুলো ঘটপূজা।
পূজামণ্ডপের মধ্যে আনোয়ারা উপজেলায়া ২৯৯টি, কর্ণফুলীতে ২৮টি, মিরসরাইয়ে ৯০টি, সীতাকুণ্ডে ৬৭টি, সন্দ্বীপ ৩০টি, ফটিকছড়িতে ১২৩টি, হাটহাজারীতে ১১৪টি, রাউজানে ২২৮টি, রাঙ্গুনিয়ায় ১৬১টি, বোয়ালখালীতে ১৪৬টি, পটিয়ায় ১৯৫টি, চন্দনাইশে ১২৮টি, সাতকানিয়ায় ১৮৪টি, লোহাগাড়ায় ১১১টি, বাঁশখালীতে ২৫০টি মণ্ডপে পূজা হয়েছে।এদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পূজার আনুষ্ঠানিকতা না থাকায় আজ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার অনুরোধ করছেন মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ।