বাংলাদেশ প্রতিদিন খবর
- শনিবার ১৩ আগস্ট, ২০২২ / ৩২০ জন দেখেছে

ধর্মিন্তরিত হওয়া সহ মুসলিম রীতি অনুস্মরণে মেডিকেল ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন ডা. তন্ময় কুমার দেবনাথ নামের এক চিকিৎসক। নথিপত্রে বিয়ের চার বছর হলেও এখনও ছাত্রীর মেলেনি স্ত্রী হিসেবে পারিবারিক স্বীকৃতি।
এরপরও সংসার বাঁধার স্বপ্ন দেখেছেন তিনি। এতে সইতে হয়েছে চিকিৎসক প্রেমিক স্বামীর শারীরিক, মানসিক নির্যাতন। বিবাহ বিচ্ছেদের কৌশল হিসেবে এখন ছাত্রীর আপত্তিকর চারিত্রিক তথ্য প্রচারে লিপ্ত হয়েছেন তার চিকিৎসক স্বামী বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী মেডিকেল ছাত্রী।
স্ত্রীর স্বীকৃতি প্রাপ্তিতে ব্যর্থ আর প্রতারণার শিকার ওই ছাত্রী এখন বিচার দাবিতে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে। বিচার প্রার্থণায় এরই মধ্যে চিকিৎসক স্বামীর বিরুদ্ধে ওই ছাত্রী দিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগপত্র। সংযুক্তিপত্রে দেয়া হয়েছে রাজশাহী জেলা নোটারী পাবলিকে এফিডেভিটের মাধ্যমে ধর্মান্তর হওয়াসহ নিকাহ রেজিস্ট্রারের নথিপত্র।
ছাত্রীর একান্ত সাক্ষাৎকার আর অভিযোগলিপিতে তথ্যের সূত্র মতে, ওই ছাত্রীর স্বামী ডা. তন্ময় কুমার দেবনাথ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি কালিহাতী পৌর শহরের ২ নং ওয়ার্ডের ঘূণী এলাকার নলনী কান্ত নাথ ও ইতি রাণী দেবনাথের ছেলে। ভুক্তভোগী রাজশাহী জেলার বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ছাত্রী।
সরেজমিনও দেখা গেছে, ডা. তন্ময় কুমার দেবনাথ পরিচয়েই কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করছেন ধর্মান্তর হওয়া ওই চিকিৎসক। একান্ত সাক্ষাৎকারে তন্ময় আমার ভালোবাসার মূল্য দেয়নি আহাজারি আর এমন আক্ষেপ করছিলেন মেডিকেল কলেজের ছাত্রী সুলতানা (ছদ্মনাম)।
এছাড়াও ছাত্রী আরও বলেন, ২০১৬ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন ডা. তন্ময় কুমার দেবনাথ। সে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫১ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এমবিবিএস শেষে তন্ময় রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ইনডোর এন্ড ইর্মাজেন্সি মেডিকেল অফিসার (আইএমও) পদে যোগদান করেন। এসময় আমি ওই মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলাম। এরপর ওই মেডিকেলের অর্থোপেডিক বিভাগের দায়িত্ব পান ডা. তন্ময়।
ওই বিভাগে যোগদানের পর সে আমাকে পছন্দ করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে তন্ময় আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। তবে আমরা দুইজন দুই ধর্মের অনুসারি হওয়ায় আমি সম্পর্ক স্থাপনে অসম্মতি জানাই। এরপরও তন্ময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার সম্মতি পোষণ করাসহ আমাকে বিয়ে করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে প্রেমের সর্ম্পক স্থাপন করেন।
এরপর ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট রাজশাহী জেলা নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এফিডেভিট এর মাধ্যমে ধর্মান্তর হন ডা.তন্ময় কুমার দেবনাথ। ওই এফিডেভিটে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা সহ পূর্বের নাম তন্ময় কুমার দেবনাথ এর স্থলে তন্ময় নাম ঘোষণা করেন সে।
এরপর ওইদিনই ইসলামী বিধি বিধান অনুস্মরণের মাধ্যমে রাজশাহী জেলার মোহনপুর থানার ৫ নং বাকশিমইল ইউপি নিকাহ্ রেজিস্ট্রার মো. মোকাদ্দিম হোসেন (শাওন) এর কার্যালয়ে তিন লাখ টাকা দেনমোহরনায় আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। এরপর তন্ময় ঢাকার কেরানীগঞ্জ এর জিঞ্জিরা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ৩৯তম বিসিএস ক্যাডার পদে যোগদান করেন।
এসময় তন্ময় মালঞ্চ হাসপাতালের ডরমেটরিতে থাকতেন। ওই ডরমেটরি বেশিরভাগ সময় ফাঁকা থাকায় এবং বিবাহিত স্ত্রী হওয়ায় আমার সেখানে মাঝে মধ্যেই যাতায়াত ছিল। এরপর জানতে পারি মেডিকেলে অধ্যায়নরত অবস্থায় ২০১৩-১৪ সালে রাজশাহী জেলার পাটিয়া উপজেলার শান্তি নামের একটি মেয়ের করা নারী নির্যাতন মামলায় তন্ময় তিন রাত কারাভোগ করেছিলেন।