রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক নিউজ :
গাজায় চলমান যুদ্ধ ও মানবিক সংকটের প্রেক্ষাপটে টেকসই শান্তির পথ খুঁজে বের করতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন। আলোচ্য বিষয়: যুক্তরাজ্যের প্রস্তাবিত ‘গাজা শান্তি পরিকল্পনা’, যা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার সম্ভাব্য রূপরেখা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সূত্র জানায়, সোমবার স্কটল্যান্ডে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকে স্টারমার এই পরিকল্পনার প্রাথমিক রূপরেখা উপস্থাপন করেছেন। যদিও এ বৈঠকের বিস্তারিত প্রকাশ পায়নি, তবে লন্ডনের রাজনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, এই পরিকল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে যুদ্ধবিরতি, মানবিক সহায়তা এবং দুই রাষ্ট্র সমাধান—যার মধ্যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
ব্রিটিশ সরকারের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট—“এই পরিকল্পনায় হামাসের কোনো ভূমিকা থাকতে পারে না।”
ডেইলি টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, শান্তিপ্রস্তাবে যেসব শর্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে:
* একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি,
* ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি,
* গাজায় চরমপন্থী হামলা বন্ধ,
* মানবিক সহায়তার বাধাহীন প্রবাহ।
এই পদক্ষেপকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর ঘোষণার ধারাবাহিকতায় একটি কৌশলগত উন্নয়ন হিসেবে দেখা হচ্ছে। ম্যাখোঁ ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, ফ্রান্স হতে যাচ্ছে প্রথম জি-৭ দেশ যারা আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।
লেবার পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারেও ফিলিস্তিন স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতি ছিল। এখন সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ঘটার সম্ভাবনা দৃশ্যমান।
স্টারমার বলেন, “যা কিছু গাজায় দেখছি, তা মর্মান্তিক ও নির্মম।জিম্মিদের আটকে রাখা, ফিলিস্তিনি জনগণকে অনাহারে রাখা, মানবিক সহায়তা আটকে দেওয়া এবং গাজায় ইসরাইলের অনুপাতহীন সামরিক অভিযান—এসবই নিন্দনীয়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমি এমন একটি শান্তির রূপরেখা তৈরির চেষ্টা করছি, যা স্থায়ী যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পথে যেতে পারে।”
যদিও মার্কিন প্রশাসন ম্যাখোঁর উদ্যোগের সমালোচনা করেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্টারমারের অবস্থানের প্রতি আপত্তি প্রকাশ করেননি। বরং তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা গাজার ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র স্থাপনে সহায়তা করবে।
ডেইলি টেলিগ্রাফের মতে, প্রধানমন্ত্রী স্টারমার তার প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনাটি আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি ও অন্যান্য ইউরোপীয় মিত্রদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করবেন।
এই উদ্যোগ শুধু গাজা নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ায় একটি মোড় ঘোরানো পদক্ষেপ হতে পারে। যদি যুক্তরাজ্য ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়, তবে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।