সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:১১ অপরাহ্ন
মোঃ সেলিম উদ্দিন খাঁন বিশেষ প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ১৪৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রধান শিক্ষক নেই ২৭টিতে। অবসর, বদলি ও মৃত্যুর কারণে প্রধান শিক্ষকের এসব পদ শূন্য রয়েছে। প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকেরও ৯৭টি পদ শূন্য রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে। এতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।
এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে দ্রুত প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা। যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে সেগুলো হলো উত্তর ব্রাহ্মণডেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাগরিয়া গনিপাড়া, কাঞ্চনা, আমিলাইষ, ধর্মপুর, হিলমিলি, উত্তর-পূর্ব এওচিয়া, আলীনগর, দক্ষিণ ঢেমশা, ইছামতি, দক্ষিণ কেঁওচিয়া, ধর্মপুর আলমগীরপাড়া, শীলঘাটা, দক্ষিণ রূপকানিয়া, সোনাকানিয়া, গারাংগিয়া, দক্ষিণ গারাংগিয়া, মির্জাখিল, বায়তুল ইজ্জত, দুর্লবেরপাড়া, মধ্য গারাংগিরা, ধর্মপুর মুহুরীপাড়া, দক্ষিণ কেশুয়া, উত্তর কালিয়াইশ, ছিটুয়াপাড়া, ইছামতিকুল ও পূর্ব হোছননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাতকানিয়া পৌরসভার ছিটুয়াপাড়া হাজি ঠাণ্ডা মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
জ্যেষ্ঠ শিক্ষক জোবেদা বেগম বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে একাই দপ্তরের সব কাজকর্ম করার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালন করতে হয়। মাঝেমধ্যে যেতে হয় উপজেলা শিক্ষা অফিসেও।
এদিকে আমিলাইষ ইউনিয়নের আমিলাইষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানু বিজয় চৌধুরী অবসরে গেছেন।
বর্তমানে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হাবিবুর রহমান প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। একইভাবে খাগরিয়া ইউনিয়নের খাগরিয়া গনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল আলম অবসর চলে গেছেন। তার স্থলে বর্তমানে সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন আলী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।অন্যদিকে আমিলাইষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা হাবিবুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানু বিজয় চৌধুরীর অবসরের কারণে পদটি শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া ১টি সহকারী শিক্ষকের পদও খালি রয়েছে। বর্তমানে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব করছেন।
এতে বিদ্যালয় পরিচালনা, পাঠদানসহ দপ্তরের আনুষঙ্গিক কাজেও সময় দিতে হয় তাকে। ফলে শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।এভাবে বিভিন্ন কারণে প্রধান শিক্ষক না থাকায় নানা জটিলতায় ভুগছে উপজেলার ২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই সব বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরাই বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।
স্থানীয় অভিভাবক জমির উদ্দিন জানান, শিক্ষক না থাকলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হয়। কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটছে। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মানও কমছে। এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে দ্রুত শূন্য পদগুলো পূরণের দাবি জানান তিনি।মমতাজ উদ্দিন নামে আরেক অভিভাবক জানান, ক্লাস ও দাপ্তরিক কাজ একসঙ্গে করা কঠিন।
শিক্ষক কম থাকায় বিদ্যালয়ে প্রতিদিন নিয়মিত সব ক্লাস হয় না। এতে শিক্ষার্থীরা অনেকটা পিছিয়ে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্রুত প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে জনবল নিয়োগ জরুরি হয়ে পড়েছে। সাতকানিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার কৃষ্ণলাল দেবনাথ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য ও সহকারী শিক্ষকসংকটের ফলে শিশুদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে, সেই পদগুলোতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া সহকারী শিক্ষকের সংকটও দূর করার চেষ্টা চলমান রয়েছে।’