বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৬ অপরাহ্ন
মোঃ সেলিম উদ্দিন খাঁন বিশেষ প্রতিনিধি :
অক্টোবর মাসে দেশে ৪৪৩ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৬৯ জন। নিহতদের মধ্যে ৭৪ জন নারী ও ৬৬ শিশু রয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৮৩৭ জন।
এ সময়ে ঘটা দুর্ঘটনার মধ্যে ২০৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা, যাতে নিহত হয়েছেন ১৯৬ জন। যা মোট নিহতের ৪১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। অক্টোবরের মোট দুর্ঘটনার ৪৬ দশমিক ৯৫ শতাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা।
দুর্ঘটনায় ১০২ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৬৭ জন। একই সময়ে চার নৌ-দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছেন। এ সময়ে ২১টি রেল ট্র্যাক দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৯৬ জন (৪১দশমিক ৭৯ শতাংশ), বাসের যাত্রী ৩১ জন (৬ দশমিক ৬০ শতাংশ), ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি-লরি আরোহী ২০ জন (৪ দশমিক ২৬ শতাংশ), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স আরোহী ১২ জন (২ দশমিক ৫৫ শতাংশ) রয়েছেন নিহতদের মধ্যে। এছাড়া মোট নিহতের মধ্যে থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি অটোরিকশা-অটোভ্যান-টমটম) ৯৪ জন (২০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী ( মাড়াই গাড়ি-পাওয়ারটিলার) ১০ জন (২ দশমিক ১৩ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল-রিকশা আরোহী ৪ জন (শূন্য দশমিক ৮৫ শতাংশ) রয়েছেন।
যানবাহনের মধ্যে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-
পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ড্রামট্রাক- আঠারো চাকার লরি ২৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এছাড়া মাইক্রোবাস-
প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জিপ ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি অটোরিকশা-অটোভ্যান-টমটম) ১৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-করিমন-ভটভটি-আলমসাধু–মাহিন্দ্র-হ্যালোবাইক-ধান মাড়াই গাড়ি-পাওয়ারটিলার) ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ, বাইসাইকেল-রিকশা এক দশমিক ৮১ শতাংশ এবং অজ্ঞাত যানবাহন ২ দশমিক ৭১ শতাংশ।
বিভাগওয়ারি পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ, প্রাণহানি ৩০ দশমিক ৭০ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ, প্রাণহানি ১৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ, প্রাণহানি ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ। খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ৯ শতাংশ, প্রাণহানি ৮ দশমিক ১০ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৪ দশমিক শূন্য ৬ শৎংশ, প্রাণহানি ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ, প্রাণহানি ৫ দশমিক ১১ শতাংশ। রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ, প্রাণহানি ১১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং প্রাণহানি ৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১৩১ দুর্ঘটনায় ১৪৪ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২২ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৪ জন।
একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় ৩৪ দুর্ঘটনায় ৩৯ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম মাগুরা, ঝালকাঠি, বরগুনা ও পঞ্চগড় জেলায়। এ ৪ জেলায় কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি ঘটেনি।
রাজধানী ঢাকায় ২৯ সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত এবং ৩৪ জন আহত হয়েছেন। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো।
এছাড়াও রয়েছে জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।