শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন
রাজধানীর শাজাহানপুরে এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যার ঘটনায় শ্যুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি।
হত্যার আগের দিনই টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকাশ স্বীকার করেছেন।
রবিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, হত্যার আগের তিন দিন টিপু রেস্টুরেন্ট থেকে বাসার উদ্দেশে বের হলে রাস্তায় অনুসরণ করে গুলি করার প্রস্তুতি নেন মাসুম।
তবে বেশি লোকজন থাকায় ব্যর্থ হন। ঘটনার দিন (২৪ মার্চ) এক ব্যক্তি টিপুর রেস্টুরেন্টে অবস্থান করে মাসুমকে আপডেট দিতে থাকেন। টিপুর গাড়ি শাহজানপুরে রাস্তায় যানজটে দাঁড়ালে টিপুকে লক্ষ্য করে এলাপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যান আকাশ।
গ্রেপ্তারের আগে মাসুম বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় যান দেশ ছাড়ার জন্য। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ চারটি মামলা রয়েছে। সেই মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য টিপুকে হত্যার কন্ট্রাক্ট পান তিনি। মাসুম একজন প্রফেশনাল কিলার বলেও জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, তার সহযোগী যারা ছিল, এ ঘটনার পেছনে কারা ছিল- তাদের গ্রেফতার করবো। এছাড়া মোটরসাইকেল ও অস্ত্র উদ্ধার করবো।
টিপুকে হত্যা করতে কত টাকা কন্ট্রাক্ট হয় জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, কত টাকার বিনিময়ে তা জানা যায়নি। তবে গ্রেফতার মাসুমের নামে এলাকায় বেশকিছু মামলা রয়েছে। সেই মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য টিপুকে হত্যার কন্ট্রাক্ট পান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু খুন হন। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে রিকশায় থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতি গুলিতে নিহত হন। আহত হন টিপুর গাড়িচালক মুন্না।
এই হত্যাকাণ্ডে যারাই কলকাঠি নাড়ুক, তাদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম বাদী হয়ে শুক্রবার (২৫ মার্চ) সকালে শাহজাহানপুর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, তার স্বামী মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। তিনি মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে দলীয় কোন্দল ছিল। তাকে চার-পাঁচ দিন আগে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতকারীরা মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেয়।
অভিযোগে বলা হয়, ঘটনার দিন মাইক্রোবাসে করে এজিবি কলোনি থেকে বাসার উদ্দেশে আসার পথে শাহজাহানপুর মানামা ভবনের বাটার দোকানের সামনে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতকারীরা তার গাড়িতে এলোপাতাড়ি গুলি করে, গুলিতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়। টিপুর গলা, বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১১টি গুলি লেগেছে। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে প্রীতি নামের এক পথচারীও নিহত হন।