বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩১ অপরাহ্ন
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নিয়ামত নগর এম.ইউ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ঝাড়ুদার পদে চাকুরী করছিলেন মায়ারানী বাসফোর নামের এক নারী। এরই মধ্যে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক খয়বর হোসেন তাকে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির প্রলোভন দিয়ে স্বাক্ষর নেয়। বিধিবাম! এই স্বাক্ষর দেওয়ার পর থেকে বেতন-ভাতা বন্ধ হয় মায়ারানীর। এমনকি চাকুরী যেতেও বসেছে তার। প্রধান শিক্ষকের এই ভেল্কিবাজির প্রতিকার চেয়ে সংশ্লিষ্টদের বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করেছে তিনি।
সম্প্রতি সরেজমিনে ও অভিযোগপত্র সুত্রে জানা যায়, গত ১৯৯৬ইং সালে ওই বিদ্যালয়ে চতুর্থ শেণির কর্মচারি (ঝাড়ুদার) পদে মায়ারানী বাসফোর নিয়োগ পেয়ে সুনামের সাথে চাকুরী করে আসছিলেন। এরপর গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি প্রধান শিক্ষক খয়বর হোসেন তার অফিস কক্ষে মায়ারানীকে ডেকে নেয়। এসময় বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা হবে মর্মে কম্পিউটার টাইপকৃত একটি কাগজপত্রে মায়ারানীর স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এই স্বাক্ষর দেওয়ার পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় মায়ারানীর বেতন-ভাতা। পরে প্রধান শিক্ষক জানান যে, ওই স্বাক্ষর করা পত্রটি ছিল চাকুরী থেকে ইস্তফাপত্র। অথচ চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত মায়ারানীর এমপিও সিটে বেতন-ভাতা যুক্ত রয়েছে। কিন্তু মাসের পর মাস অতিবাহিত হলেও অদ্যবদি বেতন-ভাতা তুলতে পারছে না মায়ারানী বাসফোর। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে স্বামীহারা মায়ারনী পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। শুধু তায় নয়, সংশ্লিষ্টদের নিকট দাখিল করা অভিযোগটি প্রত্যাহার করে নিতে মায়রানী ও তার পরিবারকে প্রধান শিক্ষক নানাভাবে হুমিক দিয়ে আসছে মর্মে জানা গেছে।
এদিকে, মায়ারানীর ওই পদটি শূন্য এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আরও সৃষ্ট পদ দেখিয়ে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রধান শিক্ষক। এ নিয়োগে বানিজ্য করার উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন করাসহ প্রধান শিক্ষক কর্তৃক নানাভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এ সংক্রান্ত রেজুলেশনে কমিটির একাধিক সদস্যের স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
মায়ারানী বাসফোর কান্নাজড়িতে কন্ঠে বলেন, আমি চাকুরী হতে ইস্তফা দেইনি। প্রধান শিক্ষক খয়বর হোসেন আমাকে বেতন বৃদ্ধির প্রলোভন দিয়ে একটি পত্রে স্বাক্ষর নিয়েছে। আমিন জানতাম না যে, সেটি ইস্তফাপত্র ছিল। চাকরী ফিরে পেতে সংশ্লিষ্টগণের নিকট আকুতি জানাচ্ছি।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে নিয়ামত নগর এম.ইউ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খয়বর হোসেন জানান, জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ অনুযায়ী মায়ারানী বাসফোর চাকুরীর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। তাই মায়ারানী নিজেই চাকুরী ইস্তফা দিয়েছে।