সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন
মো. সেলিম উদ্দিন খাঁন
চট্টগ্রামে গণসংযোগের সময় বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত এমপি প্রার্থী এরশাদউল্লাহর সঙ্গে গুলিবিদ্ধ সরোয়ার হোসেন বাবলা মারা গেছেন। সন্ধ্যায় বায়েজিদ এলাকায় গুলিবিদ্ধ সরোয়ারকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
রাত ৮টা ১০ মিনিটে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিন খবরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। সরোয়ারের ছোট ভাই ও প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ আজিজ বাংলাদেশ প্রতিদিন খবরকে জানান, বিকেলে বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ ও তার সমর্থকরা বায়েজিদ বোস্তামী এলাকার খন্দকার পাড়ায় লিফলেট বিতরণ করছিলেন।
‘এসময় হঠাৎ মাইক্রোবাসে ৭-৮ জন এসে তাদের লক্ষ্য করে পেছন থেকে এলোপাথাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায়,’ বলেন তিনি।এতে এরশাদ উল্লাহ, সরোয়ার ও এরফানুল হক শান্ত গুলিবিদ্ধ হন।
সরোয়ারের বড় ভাই মোহাম্মদ আলমগীর জানান, গত কয়েক দিন ধরে প্রতিপক্ষরা সরোয়ারকে হত্যার হুমকি দিচ্ছিল।চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহকে গত ৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। আজ গণসংযোগ চালানোর সময় তিনি, তার সঙ্গে থাকা সরোয়ার ও শান্ত গুলিবিদ্ধ হন।
পুলিশ জানায়, সরোয়ার চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) ৮ নেতা হত্যা মামলার অন্যতম পলাতক আসামি সাজ্জাদ হোসেনের সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। প্রায় দেড় দশক আগে চট্টগ্রামে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সরোয়ার হোসেন বাবলা ও তার বন্ধু নুরন্নবী ম্যাকসনের নাম আলোচনায় আসে।
২০১১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ম্যাকসনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বায়েজিদ বোস্তামী এলাকা থেকে সরোয়ারকেও গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় তাদের কাছ থেকে একটি একে–৪৭ রাইফেল, দুটি পিস্তল, একটি এলজি, দুটি একে–৪৭ ম্যাগাজিন ও বিপুল পরিমাণ গুলি জব্দ করা হয়।
২০১৭ সালে তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে কাতারে চলে যান। ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দর থেকে সরোয়ারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি একে–২২ রাইফেল, ৩০ রাউন্ড গুলি ও একটি এলজিসহ ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
চার বছর জেলে থাকার পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। গত বছরের ২৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সরোয়ারকে আবারও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ৫ আগস্ট তিনি জামিনে মুক্তি পান।
বায়েজিদ ও চান্দগাঁও এলাকায় ছোট সাজ্জাদ ও সরোয়ারের অনুসারীদের মধ্যে মাঝে মাঝে চাঁদাবাজি ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিরোধ ও সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গেছে।