মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে ধলাই নদী সহ পাহাড়ী ছড়া সমুহে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টির পানি ও উজানের পাহাড়ি ঢল নেমে কেওলার হাওর ও আদমপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে। বোরো ধান কাটার বাকি থাকা প্রায় ৫শ’ হেক্টর জমি ঢলের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢল অব্যাহত থাকলে আরও পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার আশঙ্কায় আতংকিত এলাকাবাসী। মৌসুমের শুরুতে সেচ সংকট, খরা, অনাবৃষ্টি, পোকার আক্রমণসহ নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করেন কৃষকরা।সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি ঢলে উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের আদকানি, নয়াপত্তন, উত্তরভাগ পানিতে তলিয়ে গেছে। ঢল ও জলাবদ্ধতায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫শ’ হেক্টর পাকা বোরো ধান তলিয়ে গেছে এবং আরও প্রায় ৫শ’ হেক্টর আংশিক নিমজ্জিত হয়েছে। শ্রমিক নিয়ে কৃষকেরা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসব এলাকার নিচু জমিতে আবাদী বোরো ধান তলিয়ে গেছে। উপজেলার পতনঊষারের কেওলার হাওর এলাকার ধান কাটা প্রায় শেষ পযার্য়ে। তবে আশপাশ এলাকার কিছু ধান নিমজ্জিত ও আংশিক নিমজ্জিত রয়েছে। এদিকে আদমপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে যেকোন সময় বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে ১০-১২টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকায় রাত জেগে বাঁধ পাহারা দিচ্ছেন এলাকাবাসী। আদমপুরের আদকানি গ্রামের জুবেল আহমেদ ও সাইদুল ইসলাম তানভীর জানান, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে এলাকার প্রায় ৫০০ হেক্টর কৃষি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। এতে কৃষকরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।ঘোড়ামারা গ্রামের সালেহ আহমেদ ও পশ্চিম ঘোড়ামারা গ্রামের সুজাতা বেগম বলেন, ধলাই নদীর পাড়েই আমাদের ঘর। নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে আমরা খুব আতঙ্কে দিন কাঠাচ্ছি। রাতে ভয়ে আমাদের ঘুম হয় না। যেকোন সময় বাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করতে পারে। আমরা উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি দ্রæত যেন আমাদের এলাকার বাঁধটি মেরামত করা হয়। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে কমলগঞ্জে ৪ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রণ করা হয়। তবে কৃষকদের আগ্রহে এ বছর এর মধ্যে ২শ’ ১০ হেক্টর বেশি জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলার ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আগামী দু’চার দিনের মধ্যে কৃষকরা শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন। কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান বলেন, বৃষ্টি ও ঢলের পানিতে বোরো ধানের কিছুটা এলাকা আংশিক নিমজ্জিত হলেও দ্রæত পানি নেমে যাচ্ছে। কৃষকরাও ধান কেটে ঘরে তুলে নিচ্ছেন। বৃষ্টি ও ঢলের পানিতে কোন সমস্যা হবে না বলে তিনি জানান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: বিল্লাল হোসেন
www.e.bdprotidinkhabor.com
Copyright By MOHAMMAD ASIF