মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ধলাই, লাঘাটা ও পলক নদীতে বাঁশের বেড়া দিয়ে পানির গতিরোধ করে মাছ শিকার করছে এক দল দুস্কৃতিকারী। ফলে মাছের নদিতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ও মাছের অবাধ বিচরণ এবং বংশবৃদ্ধি হুমকির মুখে পড়েছে।
এ ব্যাপারে এলাকার স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুম আসলেই শুরু হয় মাছের রেনু ও মা-মাছ নিধনের অবৈধ কার্যক্রম। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে লোক দেখানো অভিযান করেন। এতে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে দৃস্কৃতিকারিরা। জানা যায়, বোরো চাষের জন্য প্রায় তিম মাস মনু ব্যারেজ বন্ধ করে লাঘাটা নদীর পানি আটকানো হয়েছিল। দীর্ঘ সময় নদীতে পানি থাকার ফলে মাছসহ জলজ প্রাণীর ছিল অবাদ বিচরণ।
গত এক সপ্তাহ আগে মনু ব্যারেজ খুলে দেওয়ার কারণে নদীর পানি কমে যায়। এই সুযোগে স্থানীয় মৎস্য নিধনকারী বিভিন্ন চক্র লাঘাটা নদীতে অবৈধভাবে বাঁশের বেড়া ও নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে দিনরাত মৎস্য নিধন করে যাচ্ছে। ফলে দেশি মাছের প্রজনন, পানি প্রবাহ ও নদীর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া মৎস্য নিধনকারী চক্রের কারণে নদীতে থাকা দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন বিগ্ন ঘটছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধলাই ও লাঘাটা নদীর নিম্নাঞ্চল এলাকায় কয়েকটি চক্র নদীতে বাঁশের বেড়া স্থাপন করে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে মৎস্য শিকার করছে। লাঘাটা নদীর কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়ন ও রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়ন এলাকায় কয়েকটি বাঁশের বেড়া এবং পলক নদীতেও একাধিক বাঁশের বেড়া বসানো হয়েছে। এসব বেড়ার ফলে মাছের অবাধ বিচরণ ও পানি প্রবাহে বাঁধাগ্রস্ত হয়ে খাঁচায় আটকে মাছ, ব্যঙ, সাপ, কুচিয়াসহ নানা প্রজাতির জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে।
পতনঊষারের শামসু মিয়া, আব্দুর রহমান, ফেরদৌস আহমেদ বলেন, কয়েক বছর আগেও পলক নদী, লাঘাটা নদী ও কেওলার হাওরে প্রচুর দেশীয় মাছ পাওয়া গেলেও এখন মাছের বিরানভূমি চলছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় তারা নদী সেচ, বাঁশের বেড়া ও নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল স্থাপন করে মাছ শিকার করলেও এদের বিরুদ্ধে সাময়িক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও স্থায়ী কোন সমাধান হচ্ছে না। তারা আরও বলেন, যদি মৎস্য শিকারীরা অবৈধ পন্থায় মাছ শিকার বন্ধ করতো তাহলে দেশীয় মাছের অভাব হতো না। এভাবে স্থানে স্থানে বাঁশের বেড়া নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দেওয়ার কারণে মাছ উজানে উঠতে পারছে না।
কমলগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শহিদুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, কয়েক দিন আগে লাঘাটা নদীতে অভিযান করে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ করেছি। দুই-একদিনের মধ্যে আবারো অবৈধ বেড়া ও নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: বিল্লাল হোসেন
www.e.bdprotidinkhabor.com
Copyright By MOHAMMAD ASIF