প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ২১, ২০২৪, ১০:২১ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ৬, ২০২২, ৬:৫৬ অপরাহ্ণ
বর্তমানে রমজান চলাকালীন সময়ে বিদ্যুৎ এর এই অসহনীয় দুর্ভোগে অতিষ্ঠ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। সারাদিন বিদ্যুৎ না থাকার পর সন্ধ্যায় একটু বিদ্যুৎ এর আশার পানে চেয়ে থাকলেও দেখা মিলছে না বিদ্যুৎ এর। বিদ্যুৎ এর লুকোচুরি কারণে লেখাপড়ায় মনোযোগ দিতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। এতে করে তাদের ফলাফলে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে আশংকা করছে।
পৌরশহরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা কিছুটা সুস্থ্য থাকলেও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজেহাল। বিশেষ করে গ্রামে বসবাসরত শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে। হঠাৎ করেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়া আবার হঠাৎ বিদ্যুৎ আসার ফলে বাসা-বাড়ির ফ্রিজ, আইপিএস, ফ্যান নষ্ট হচ্ছে।
শুধুমাত্র দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াতেই নয় স্বাভাবিক দিনে যথাযথ বিদ্যুৎ টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে পিডিবি। একটু ঝড়-বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই, গোটা রাত বিদ্যুতবিহীন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। বিদ্যুতের এই সীমাহীন দুর্ভোগে গোটা উপজেলাবাসী ফুঁসে উঠেছে।
গ্রীষ্মকাল শুরু হওয়ার সাথে সাথে বিদ্যুৎ এর ঘন ঘন লোডশেডিং নিয়ে ইতিমধ্যে উপজেলাবাসী উদ্বিগ্ন। ঘন ঘন লোডশেডিং ও ওভারলোডিং এ অতিষ্ঠ উপজেলাবাসীর বাসা-বাড়ি, ইউনিয়ন পরিষদ, ব্যাংক বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেখা দিয়েছে নানা দুর্ভোগ।
বাসা বাড়ীতে মোবাইল চার্জ, লাইট চার্জ, পানির ট্যাংকে পানি উঠাতে না পারায় কেউ কেউ জেনারেটর চালিয়ে এসকল সমস্যার কিছুটা দূর করলেও পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ না থাকায় সাধারণ জনগণ পড়ছেন বিপাকে। বিশেষ করে ফ্রিজে রাখা মাছ-মাংস, সবজি বিদ্যুতের অভাবে পঁচে নষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
বৃষ্টির পানি মাটিতে পড়ার পূর্বেই বিদ্যুৎএর এই লুকোচুরি নিয়ে গ্রাহকরা অতিষ্ঠ। ঝড়-বৃষ্টি, তুফানের সময় বিদ্যুৎ নেই আবার গ্রীষ্ম ঋতুতে স্বাভাবিক দিনেও বিদ্যুৎ দেখা মিলছে না কোন কোন দিন।
বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ রয়েছে সখীপুর উপজেলায়। কিন্তু মেইন লাইনে দীর্ঘক্ষণ গাছপালা পড়ে থাকার কারণে বিদ্যুৎ লাইন সচল করতে বিলম্ব হচ্ছে। তাই একদিকের লাইন বন্ধ রেখে অন্য দিকের লাইন চালু রাখতে হয়েছে। এদিকে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের সাথে আলাপে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ রয়েছে বললেও সখীপুর বাসি কেন থাকবে অন্ধকারে?
গ্রাহকদের অভিযোগ, দু’-এক দিন নয়, দিনের পর দিন ধরে একই অবস্থা চলছে সখীপুর উপজেলা বাসী। বিদ্যুৎ দফতরের অফিসারদের অভিযোগ জানাতে গেলে ‘ঝুঁকিপূর্ণ লাইন’, ‘জনবলের অভাব’, ‘লাইন টিকছে না’, বলে তারা গ্রাহকদের বোঝ দেন। তা নিয়েই ক্ষোভে ফুঁসছেন বিদ্যুৎবঞ্চিত বাসিন্দারা।
উপজেলার কচুয়া গ্রামের একজন জানান, “মাঝে মধ্যেই বিদ্যুৎ তো চলে যাচ্ছেই। যেটুকু সময় থাকছে, তখন প্রয়োজনীয় কাজ তাড়াহুড়ো করে শেষ করতে হয়। এমন অবস্থায় খুব সমস্যায় পড়েছি।”
কচুয়া গ্রামের ব্যবসায়ী (নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক) বলেন “আমাদের প্রতিদিনকার উপার্জনের একটি বৃহৎ অংশ বিদ্যুৎএর উপরে নির্ভর করে থাকে। অথচ বিদ্যুৎ এর ওই অবস্থা পরিবর্তনে কোনও উদ্যোগ নেই উপজেলার পিডিবি অফিসারদের।”
বড়চওনা গ্রামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের ঘণ্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎহীন হয়ে থাকতে হচ্ছে। সারাদিন রোজা রাখার পরে একটু শান্তিতে ইফতার করবো তাও করতে পারিনা, তারাবির নামাজের সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। বিদ্যুতের ওই বেহাল অবস্থার কথা আমরা এলাকাবাসী একাধিকবার জানিয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয় না।”
কালিয়া গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, বুরো ধানের সেচ দিতে না পাড়ায় এলাকা বাসি ফুসঁলে ওঠেছে। এমন অবস্থা চলছে থাকলে কৃষকের ভাল ফসল পাবার কোন আশা নেই।
বিক্রয় এবং বিতরন বিভাগে বিদ্যুৎ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সখীপুর উপজেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিদ্যুৎ এর যে সমস্যা হচ্ছে তা নিয়ে আমরা গ্রাহকদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
প্রচন্ড রোদের কারণে বিদ্যুৎ এর সমস্যা হচ্ছিল। ঝড় বৃষ্টি না থাকলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। আমরা গ্রাহকদের সেবা দিতে সর্বদা কাজ করে যাচ্ছি।