মৌলভীবাজার-৪ শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ নির্বাচনী এলাকার ছয়বারের নির্বাচিত এমপি,সাবেক চীফ হুইপ,অনুমতি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা উপাধ্যক্ষ ড. মো.আব্দুস শহীদকে নিয়ে ফেসবুক থেকে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। পৃথকভাবে এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল এলাকার আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ, ভোটার, সচেতন নাগরিক,সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
ব্যরিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনব আজ (২৬ মার্চ) শনিবার বিকালে তার ফেসবুক পেজে মাননীয় এমপি উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ এমপি “আপনিও বন দখল করেন ! কি হবে শ্রীমঙ্গলের ভবিষ্যৎ ” এমন লাইভ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তথ্য উপাত্ত ছাড়াই মনগড়াভাবে উপস্থাপন করেছেন।
তিনি ফেসবুক লাইভে বেসরকারী যুমনা টেলিভিশনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন,ফরেস্টের জায়গা দখল করেছেন, আদৌ তিনি বনের কোন জমি দখল করে চা বাগান তৈরি করেননি। ব্যরিস্টার সায়েদুল হক সুমন কিছু কতিপয় নেতাকর্মীর ধারা প্রভাবিত হয়ে তিনি এমপির নামে কুৎসা রটিয়েছেন,যা একজন সিনিয়র আইনজীবি হিসেবে তিনি ডকুমেন্ট ছাড়াই ফেসবুক লাইভে এমন বক্তব্যকে নির্বাচনী এলাকার জনগণকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন এবং মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে।
তবে তৎকালীন মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী (এসিএফ) আনিছুর রহমান জানান, আমি ২০১৮ সালে দায়িত্ব থাকাকালে লাউয়াছড়া উদ্যানের সংরক্ষিত বনের জমি দখল করে চা বাগান করার এমন অভিযোগ নাই। এমপি মহোদয় অথবা তার কোন স্বজন বনের জমি দখলের সাথে জড়িত নাই। বরং সংসদ সদস্য পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করতে তিনি বন রক্ষায় সর্বদা নিয়োজিত ছিলেন।
জানা গেছে, কমলগঞ্জ উপজেলার কাঁঠালকান্দি ও সদর ইউনিয়নের হীড বাংলাদেশের দক্ষিণপ্রান্তে অবস্থিত বাংলাদেশ চা বোর্ডের অনুমোদিত সাবারি টি প্লান্টেশন। সবমিলিয়ে ১০ একর জমিতে শখেরবসত জমি ক্রয় করে চা বাগান করেছেন। সেখানে একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে তকমা ব্যবহার করে এমপি বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে এই অপ্রচার চালাচ্ছেন।
কমলগঞ্জ লাউয়াছড়া নূরজাহান এলাকার লেবু অনারস বাগানের মালিক শাহেদ আহমদ বলেন,আমি তীব্র নিন্দা জানাই। এমপি মহোদয় বনের কোন জমি দখল বা সন্ত্রাসী লালন করেন না। এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।এদিকে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী জানিয়েছেন, বনের জমি দখলের মতো এমন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ত্রিশ বছরের পার্লামেন্ট নেতার বিরুদ্ধে এমন রেকর্ড নাই। যুমনা টেলিভিশনে এমপি মহোদয়ের বক্তব্যের মাঝখান দিয়ে কেটে ছিড়ে, কাট-পিস করে বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছে। এতে দলীয়ভাবে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হয়েছে। এমপির এরকম কোন বক্তব্য ছিল না।
কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আসিদ আলী বলেন, একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেল ও ফেসবুকে উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপিকে নিয়ে বলেছে, বনের জমি দখল করেছেন সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার জানা মতে ওই জমির মালিক ভানুগাছ এলাকার মুহিবুর চাষী (চেরাগ মিয়া)। এই টিলা জমির বয়স হবে প্রায় ১৫০ বছর। সেই জমি আমার নেতা দলিলমূলে ক্রয় করেছেন। এখানে যারা ষড়যন্ত্র করছেন তারা এমপি সাহেবের মান ইজ্জত ক্ষুন্ন করার কৌশল চালাচ্ছে। কাজেই আমি এব্যাপারে নিন্দা প্রস্তাব জ্ঞাপন করছি।
কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন,আমি যতটুকু জানি সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে একটি বিরাট ষড়যন্ত্র করে অপ্রচার চালাচ্ছে। আশা করি এদেশের নাগরিক ও আমরা যারা রাজনীতিবিদ, আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত যেকোন মূলে এসব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে মোকাবেলা করবো। লাউয়াছড়া ফরেস্টের কোন জমি দখল করার অভিযোগ নাই এমপি’র বিরুদ্ধে। উনি ন্যায় সঙ্গতভাবে জমির ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে উনার জমিতে চা বাগান করেছেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ডা. হরিপদ রায় বলেন,২০০২ সালে থেকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। চাকরিসুবাধে উনার সাথে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক ছিল। আমার জানা মতে উনার মধ্যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ , দখলদারিত্ব মনোভাব ছিল না। আমি আওয়ামীলীগের সহসভাপতি পদে থাকাবস্থায় বিভিন্ন সামাজিক ধমীয় অনুষ্ঠানে উনার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত । কোনদিন কখনও মনে হয় হয় না, উনি দখলদারিত্বের সাথে জড়িত আছেন, এটা আমার মনে অনুভূতি এবং মন থেকে বলছি। যারা এমপিকে অপ্রচার চালাচ্ছে তার নিন্দা জানাচ্ছি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা চেয়ারম্যান ভানুলাল রায় বলেন,বার বার নির্বাচিত উপাধ্যক্ষ ড.আব্দুস শহীদ এমপি। ত্রিশ বছর যাবত নিরলসভাবে আমাদের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ নির্বাচনী এলাকার মানুষ অত্যন্ত ভালবাসে। এখানে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি ও জমিদখল নেই, হিন্দু এবং মুসলিম এক সাথে বসবাস করছি। আগামীতে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে আবারও তিনি নির্বাচিত হবেন।
কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো.জুয়েল আহমদ বলেন, একটি বেসরকারী টেলিভিশনে আমাদের টানা ছয়বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য আমাদের সকলের প্রিয় ড.মো.আব্দুস শহীদ এমপিকে জড়িয়ে জমি সক্রান্ত বিষয় নিয়ে নিউজ প্রচার করা হয়েছে। আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে অত্যন্ত ব্যতীত। যেকারণে আমি একজন রাজনীতি কর্মী ও জনপ্রতি হিসেবে মনে করি সরকারের ভাবমূর্তি ও সংসদ সদস্যের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রমূলক এই নিউজটি প্রচার করা হয়েছে। তিনি স্থানীয় সংবাদকর্মীর কাছে প্রশ্ন রেখে মেয়র জুয়েল বলেন,আমাদের কমলগঞ্জে জাতীয় দৈনিক পত্রিকার অনেক সাংবাদিকরা এখানে কর্মরত আছেন।
মৌলভীবাজার জেলায় টেলিভিশন ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা আছেন। উনি এই জমিটি ক্রয় সূত্রে মালিক হয়েছেন। সেখানে যদি বনের ভূমি দখল হতো তাহলে স্থানীয় সাংবাদিকরা জানতো, আমরা রাজনৈতিক কর্মী বা এই জেলার সকল সংবাদিকরা জানতো। এটা আমি মনে করি এই নিউজটি করা হয়েছে সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উনার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার এটি ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই না।
সেজন্য আমি মনে করি এবিষয়টি শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ নির্বাচনী এলাকার জনসাধারণের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। আমরা ব্যতীত,আমরা তার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি। তিনি সাংবাদিকদের প্রতি সত্য সংবাদ প্রচার করার অনুরোধ। কাউকে হেয় বা মান সম্মান নষ্ট করা জন্য সাংবাদিকতা নয়। সত্য বিষয়টি ধারণ করার আহবান।
মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো.রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমাদের বন কতটুকু,সেটা নিয়ে আমাদের কনফিকশন নাই। কারণ লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের সংরক্ষিত বনে পুরানো কর্মকর্তা যাহারা দায়িত্ব পালন করে গেছেন, তারা কখনই বলেনি যে, সংসদ সদস্য বনের জমি দখল করেছেন। তারপরও সরেজমিনে দেখছি বনের জমি দখল করে চা বাগান করার প্রমাণ মিলেনি সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: বিল্লাল হোসেন
www.e.bdprotidinkhabor.com
Copyright By MOHAMMAD ASIF