গাজা, ২৯ জুলাই ২০২৫:
ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের ২২ মাস পার হলেও থামেনি রক্তপাত। ভয়াবহ এই সংঘাতে গাজা উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) গাজা শহর থেকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি সামরিক অভিযানে এ পর্যন্ত ৬০ হাজার ৩৪ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৪৫ হাজার ৮৭০ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, হতাহতদের বড় অংশই নারী, শিশু এবং বয়স্ক নাগরিক। গত দুই মাসে বিশেষ করে দক্ষিণ গাজা, খান ইউনুস ও রাফাহ এলাকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় হতাহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, গাজায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির ও আবাসিক ভবন বারবার লক্ষ্যবস্তু হওয়ায় বেসামরিক প্রাণহানির হার ভয়াবহভাবে বেড়েছে।
টানা অবরোধ ও যুদ্ধের কারণে গাজায় খাদ্য, পানি, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের হিসাবে, গাজার প্রায় ৯৫% মানুষ এখন মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। অধিকাংশ পরিবার কয়েকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), ইউনিসেফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বারবার যুদ্ধবিরতি ও মানবিক করিডোর স্থাপনের আহ্বান জানিয়ে এলেও ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে এখনো কোনো স্থায়ী শান্তি চুক্তি হয়নি।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দা ও উদ্বেগ জানানো হলেও, কার্যকর চাপ বা সমাধানের উদ্যোগ খুব সীমিত। জাতিসংঘের একাধিক প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে ভেটোর কারণে বাস্তবায়িত হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সংঘাত এখন ‘নতুন স্বাভাবিক’ হয়ে উঠছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হিসেবে ইতিহাসে চিহ্নিত হবে।
৬০ হাজার প্রাণহানির এই মাইলফলক ইসরাইল-হামাস যুদ্ধকে বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক সংকটে পরিণত করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় ও সমন্বিত হস্তক্ষেপ না হলে, এই সংকটের গভীরতা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: বিল্লাল হোসেন
www.e.bdprotidinkhabor.com
Copyright © 2025 বাংলাদেশ প্রতিদিন খবর. All rights reserved.