ঢাকা, ২৯ জুলাই ২০২৫:
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, “জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের নৃশংসতা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকেও হার মানিয়েছে।” মঙ্গলবার ঢাকায় আইন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত ‘জুলাই গণহত্যার বিচার ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. নজরুল বলেন, “আমরা ৭১-এ দেখেছি হানাদার বাহিনীর বর্বরতা, কিন্তু মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলার দৃশ্য কখনও দেখিনি। অথচ এই আওয়ামী শাসনামলে এমন জঘন্য কাজ বাস্তবে ঘটেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যা, মৃতদেহ পোড়ানো—সবই মানবতাবিরোধী অপরাধ।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা অকাট্য প্রমাণ রেখে যাব, যেন পরবর্তী কোনো সরকার এই বিচারের দীর্ঘসূত্রতা ঘটাতে না পারে। জনগণের পাশাপাশি মহান আল্লাহর কাছেও আমরা দায়বদ্ধ। আমরা বিচারে কোনো গাফিলতি করব না।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবের নায়করা আমাদের পথ দেখিয়ে গেছে। শহীদ আবু সাঈদ, ইয়ামিন, মুগ্ধদের আত্মত্যাগ জাতি কখনো ভুলবে না।”
তিনি আওয়ামী সরকারের বিচারব্যবস্থার অপশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমি মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাইকোর্টে গিয়েছিলাম আগাম জামিনের জন্য। কিন্তু সেদিন বিচারক বলেছিলেন, ‘আমি মাহমুদুর রহমানের মুখ দেখতে চাই না’। এই হচ্ছে বর্তমান বিচারব্যবস্থার অবস্থা।”
তিনি বলেন, “বিচারব্যবস্থাকে এখন সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করতে হবে। নইলে জনগণ নিজেই বিচার করবে।”
অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, শহীদ মুগ্ধর পিতা মীর মোস্তাফিজুর রহমান এবং শহীদ ইয়ামিনের পিতা মহিউদ্দিনও বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা সবাই জুলাই মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানকে দেশের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সূচনা বলে অভিহিত করেন এবং দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরুর আহ্বান জানান।
পটভূমি ও প্রাসঙ্গিকতা
গত জুলাই মাসে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘটিত আন্দোলনে ব্যাপক দমন-পীড়ন, গুলিবর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে অভিযোগ ওঠে। নিহতদের অধিকাংশই ছিলেন ছাত্র ও তরুণ। দেশজুড়ে এই ঘটনা নিয়ে সৃষ্টি হয় তীব্র রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া।
আইন মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ, তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং বিচার প্রক্রিয়ার আশ্বাস জনগণের কাছে নতুন করে আশাবাদের সঞ্চার করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: বিল্লাল হোসেন
www.e.bdprotidinkhabor.com
Copyright © 2025 বাংলাদেশ প্রতিদিন খবর. All rights reserved.