মোঃ সেলিম উদ্দিন খাঁন বিশেষ প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম কক্সবাজার- মহাসড়ক প্রশস্ত না হলে দুর্ঘটনা কমবে না দুর্ঘটনাপ্রবণ ১৬০ কিলোমিটার-প্রায়ই ঝরছে তাজা প্রাণ আলোর মুখ দেখেনি চার লেন প্রকল্প। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার দেশের ব্যস্ততম মহাসড়কের একটি। এর বেশির ভাগ অংশের প্রশস্ততা মাত্র ১৮-৩৪ ফুট। ফলে দূরপাল্লার গাড়ি স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না। ১৫৯ কিলোমিটার পথ বাসে যেতে সময় লাগে ৫ থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টা।
অতিরিক্ত বাঁক, সাইড রোড থেকে যখনতখন গাড়ি মহাসড়কে উঠে আসার কারণে সড়কটি হয়ে উঠেছে দুর্ঘটনাপ্রবণ। সাম্প্রতি লবণ পরিবহনের কারণে সড়ক পিচ্ছিল হওয়ায় এটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দুই ধাপে ১১৬০ কিলোটিমার এ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করতে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-জাইকা অর্থায়ন করার কথা থাকলেও এখনো আলোর মুখ দেখেনি।স্থানীয় বুলবুল আহমেদ দৈনিক রূপবাণীকে বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরু এ সড়কে আছে বেশ কয়েকটি বিপজ্জনক বাঁক।
সড়কটি চার লেন করা হলে দুর্ঘটনা কমে আসত। লোহাগাড়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের টিম লিডার রাখাল চন্দ্র রুদ্র জানান, ঈদের ছুটিতে চার দিনে মহাসড়কের এ অংশে চারটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার জন্য আমরা বেশকিছু কারণ চিহ্নিত করেছি। লবণপানি সড়কে পড়ে পিচ্ছিল হওয়া, বিপজ্জনক বাঁক, অন্য জেলার চালকদের এ সড়কে গাড়ি চালনোর অভিজ্ঞতা না থাকা অন্যতম কারণ। কক্সবাজার ট্রাক মালিক ঐক্য পরিষদ নেতারা বলেন , পলিথিন বিছিয়ে ট্রাকে লবণ বোঝাইয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বারবার বলা হলেও কাজ হচ্ছে না। লবণপানি পড়ায় পিচ্ছিল সড়কে যানবাহন চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
লবণপানিতে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে নিরাপদ সড়ক চাই নেতা তরিকুল ইসলাম লাভলু বলেন, সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার বিকল্প নেই। কক্সবাজার চেম্বার সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী বলেন, পর্যটনে প্রবৃদ্ধি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার। মহাসড়ক এক্সপ্রেসওয়েসহ চার লেনে উন্নীত করা জরুরি। কক্সবাজার সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, যানবাহনের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি সরু। এটি প্রশস্ত করার একটি প্রকল্প রয়েছে। প্রকল্পটি বর্তমানে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মধ্যে আছে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেন করার দাবিতে ১৬ ফেব্রুয়ারি লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দেন ছাত্র-জনতা। আবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি অত্যাধিক ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে মহাসড়কের হাশমতের দোকান, ঠাকুরদীঘি, উপজেলার পদুয়া, লোহাগাড়া শহর, আধুনগর, হাজি রাস্তা, চুনতি, জাঙ্গালিয়া এলাকায় অনেক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক রয়েছে।
গাড়ির আকারের তুলনায় সড়কটি খুবই সরু, দুটি স্লিপার কোচ পাস হতে গেলে একটি রিকশা যাওয়ারও জায়গা থাকে না। শুষ্ক মৌসুমে দক্ষিণ অঞ্চল থেকে ট্রাকে কিংবা কাভার্ড ভ্যানে লবণ পরিবহন হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। ট্রাক থেকে নির্গত পানিতে পিচ্ছিল হয়ে যায় সড়ক।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা বাইকার এবং পিকনিকের বাস এ সড়কের চরিত্র বুঝতে পারে না। অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ হারান চালক। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনায় ঝরে যায় তাজা প্রাণ। অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাণহানি থেকে বাঁচতে এবং বাঁচাতে নিরাপদ সড়ক কিংবা চার লেনের সড়কের দাবি জানান ছাত্র-জনতা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: বিল্লাল হোসেন
www.e.bdprotidinkhabor.com
Copyright © 2025 বাংলাদেশ প্রতিদিন খবর. All rights reserved.