সোহেল রানা,রাজশাহী,প্রতিনিধি:
রাজশাহীর পবা উপজেলায় উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তিন ফসলি জমিতে আবারও শুরু হয়েছে পুকুর খনন। নির্বিচারে কৃষি জমিতে পুকুর খননের ফলে নষ্ট হচ্ছে তিন ফসলি জমি। এছাড়াও পুকুরখনন কাজে ব্যবহৃত মাটি বোঝাই অবৈধ ট্রাক্টর গ্রামীণ পাকা রাস্তার বারোটা বাজাচ্ছে।
আবার উপজেলা প্রশাসন থেকে দিনে অভিযান চালিয়ে যে পুকুর খনন বন্ধ করা হচ্ছে, রাতেই আবার সেই পুকুর খনন করা হচ্ছে। এই অঞ্চলের বিভিন্ন গ্ৰামে প্রশাসন-পুলিশের সহযোগিতায় এলাকাবাসীর তোপের মুখে বন্ধ হচ্ছে পুকুরখনন। এই ঘটনা ঘটেছে বড়গাছী ইউনিয়নের সবসার গ্রামে।
পবা উপজেলার বড়গাছী ইউনিয়নের সবসার মৌজায় আনুমানিক ৩০ বিঘা তিন ফসলি কৃষি জমি রয়েছে। এই কৃষি জমির মালিকদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও জোরপূর্বক পুকুর খননের জন্য স্কেভেটর নামানো হয়েছিল। খনন করা পুকুরের পাড়ে উঁচু বাধ দেয়ায় আশেপাশের কৃষিজমিতে সৃষ্টি হবে জলাবদ্ধতা। ফলে অনাবাদি হয়ে পড়বে এই অঞ্চলের আবাদি জমি।
এই আশঙ্কায় নিজেদের তিন ফসলি জমি রক্ষার জন্য বড়গাছী ইউনিয়নের সবসার, সূর্যপুর ও বেতকুড়ি গ্রামের এলাকাবাসীরা যৌথভাবে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এসিল্যান্ড ও পবা থানা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এর ফলে শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে পুকুর খনন বন্ধ করা হয়েছে।
অভিযোগকারী এলাকাবাসী জানান, বড়গাছী ইউনিয়নের সবসার ও বেতকুড়ি এলাকায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নওদাপাড়া আমচত্ত্বর এলাকার আয়নাল হকের ছেলে মো. মিজানুর রহমান রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙ্গিয়ে পুকুরখনন শুরু করেন। এই মিজান পুকুর খননকে ব্যবসা হিসেবে নিয়েছেন। তিনি বাইরের পার্টির সঙ্গে মধ্যস্থতা করে এই এলাকায় পুকুর খনন করাচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পবা উপজেলা প্রশাসনে অভিযোগ করা হয়।
গভীর রাতে মিজান এই জমিতে পুকুরখনন করলে এলাকাবাসী বিষয়টি উপজেলার (ভারপ্রাপ্ত) ইউএনও জাহিদ হাসানকে ফোন করে জানান। এতে তিনি রাতেই পবা থানার অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করেন। তৎক্ষনাত পবা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুকুরখনন কাজ বন্ধ করে দেন এবং খনন যন্ত্র তুলে নেয়ার মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেন।
পবা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসান বলেন, পুকুর খননের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই অভিযান চালানো হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে সবসার ও বেতকুড়ি এলাকাবাসীর অভিযোগের ফলে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন বন্ধ করা হয়েছে। আমি যোগদানের পর উপজেলায় অন্তত ৩০-৩৫টি অভিযান চালানো হয়েছে। এছাড়াও ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হয়েছে। তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন বন্ধে অভিযানের পাশাপাশি অবশ্যই সামাজিক সচেতনতা জরুরি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: বিল্লাল হোসেন
www.e.bdprotidinkhabor.com
Copyright By MOHAMMAD ASIF