চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলুল করিম’কে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর মামলার প্রধান আসামি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাকিল হোসেন’কে দীর্ঘ ০৭ বছর পর গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
নিহত ভিকটিম ফজলুল করিম (৩০) চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই উপজেলার নিজামপুর গ্রামের বাসিন্দা শফিউল আলমের ছেলে। সে মীরসরাই উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত ২৩ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মীরসরাইয়ের নিজামপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আমিন মুহুরী হত্যাকান্ডের জেরে গত ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখ দুপুর আনুমানিক ১২৩০ ঘটিকায় ভিকটিম তার নিজ বাড়িতে খাবার খাওয়ার সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি মোঃ শাকিল হোসেন ও তার ১২-১৫ জন সহযোগী সন্ত্রাসীরা অতির্কিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় ফজলুল করিম আত্মরক্ষার্থে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাকে ধাওয়া করে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজন এসে গুরুতর আহত অবস্থায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে একই দিন আনুমানিক ১৫০০ ঘটিকায় ভিকটিম মৃত্যুবরণ করে। উক্ত নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনাটি সে সময় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
উক্ত নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত ভিকটিম ফজলুল করিম এর পিতা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই থানায় ১২ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০২(০৯)১৭, জিআর নং-৯৭/১৭, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। উক্ত হত্যাকান্ড ঘটানোর পর হতে আসামি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে নিজ এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত হত্যা মামলার পলাতক আসামিকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়া তদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারির এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামলার প্রধান আসামি মোঃ শাকিল হোসেন ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের স্টার লাইন ফিলিং স্টেশন এর সামনে অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ২৬ মে ২০২৪ইং তারিখ আনুমানিক ১৯৪০ ঘটিকায় বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক প্রধান আসামি মোঃ শাকিল হোসেন (২৬), পিতা-কামাল হোসেন, সাং-ছরারকুল, থানা-মীরসরাই, জেলা-চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে যে, সে এবং তার অন্যান্য সহযোগীরা রাজনৈতিকভাবে প্রভাব বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জেরে ভিকটিম ফজলুল করিমকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে।
গ্রেফতারকৃত আসামি মোঃ শাকিল হোসেন এর সিডিএমএস পর্যালোচনায় তার বিরুদ্ধে মীরসরাই থানায় একটি হত্যা ও একটি হত্যার চেষ্টা এবং জোরারগঞ্জ থানায় একটি হত্যা চেষ্টার মামলা সহ সর্বমোট ০৩ (তিন)টি মামলার তথ্য পাওয়া যায় গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: বিল্লাল হোসেন
www.e.bdprotidinkhabor.com
Copyright By MOHAMMAD ASIF