ব্রিটেনের বাসিন্দা অ্যালিস কাটার। হোটেলে খাবার পরিবেশনের কাজ করতেন তিনি। ২০১৪ সালে ‘মিস হিটলার’ নামের এক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার পর তার পরিচিতি বাড়ে। তবে, এই প্রতিযোগিতার নিয়মকানুন ছিল অদ্ভুত। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সকল প্রতিযোগীকে এই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হয়।
যে প্রতিযোগী ইহুদি বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করেন, তারাই একমাত্র এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। যার পাঠানো ছবি বিচারকদের পছন্দ হবে, তিনিই হবেন বিজয়ী। তবে সমস্যা শুরু হয় ২৩ বছর বয়সী অ্যালিসের কিছু মেসেজ প্রকাশ্যে আসায়। ইহুদির উপাসনালয়ে গ্যাস হামলা অথবা কোনো ইহুদি ব্যক্তির কাটা মাথা নিয়ে ফুটবল খেলা- এ সব নিয়ে নিয়মিত বন্ধুদের সঙ্গে মজা করতেন অ্যালিস। তদন্ত শুরু করলে জানা যায়, অ্যালিস এক নব্য নাৎসি দলের সঙ্গে পরোক্ষভাবে যুক্ত। তার প্রেমিক মার্ক জোনস সেই দলের সক্রিয় সদস্য।
এই প্রসঙ্গে অ্যালিসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি অস্বীকার করেন। কিন্তু অ্যালিস এমন মিছিলে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে, যেখানে তিনি ‘হিটলার ওয়াজ় রাইট’ (হিটলার ঠিক ছিলেন) লেখা ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
২৫ বছর বয়সি মার্ক পেশায় রেল ইঞ্জিনিয়ার হলেও নব্য নাৎসি দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। অ্যালিসকে তিনি সব গোপন কথাই বলতেন। মার্ক এবং অ্যালিসের সঙ্গ দিতেন ওই দলের সদস্য গ্যারি জ্যাক এবং কনর স্কটহার্ন। এরা সকলেই নব্য নাৎসি মতবাদকে সমর্থন করতেন। কিন্তু ২০১৬ সালে ব্রিটেনের তৎকালীন গৃহমন্ত্রী অ্যাম্বার রুড কট্টর ডানপন্থী এই দলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
অ্যাম্বারের মতে এই দলের সদস্যরা সমকামী-বিরোধী, ইহুদি-বিদ্বেষী এবং বর্ণবিদ্বেষী। তার পরেও অ্যালিস এবং তার বন্ধুরা দলের হয়েই কাজ করতে থাকেন। ২০২০ সালে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দলটির চার জনকে প্রেপ্তার করা হয় এবং বার্মিংহাম ক্রাউন কোর্টে মামলায় এদের সকলের হেফাজতের নির্দেশ দেয়া হয়।
অ্যালিস তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। তাকে পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের একটি সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। অ্যালিসের প্রেমিক মার্ককে সাড়ে পাঁচ বছরের জন্য কারাদণ্ড দেয়া হয়। গ্যারি সাড়ে চার বছরের জন্য হেফাজতে এবং কনরকে দেড় বছরের জন্য আটক অবস্থায় রাখা হয়।
কিন্তু শাস্তির সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই ছাড়া পান অ্যালিস। প্যারোল বোর্ড থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েই ১২ অক্টোবর তাকে ছাড়া হয়। যেহেতু অ্যালিস দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন না, শুধু মাত্র মিছিলে শামিল হতেন তাই তার শাস্তির সময়সীমা কমিয়ে দেয়া উচিত। তাই তিন বছরের সময়কাল কমিয়ে অ্যালিস সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পান তিনি।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: বিল্লাল হোসেন
www.e.bdprotidinkhabor.com
Copyright By MOHAMMAD ASIF