রাজশাহীর তানোরে নামধারী শ্বশুর আপন পুত্রবধূর মুখ, গাল, মাথা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড়ে অসুস্থ করে ফেলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বাধাইড় ইউপির জুমারপাড়া গ্রামে রোববার রাতে ঘটে ন্যক্করজনক ঘটনাটি ।
এ ঘটনায় পুত্রবধূ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়লেও অমানুষ শ্বশুর কাউসার বাড়িতে নির্বিঘ্নে ঘুমাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, শ্বশুর ও স্বামীর ভয়ে ওই গৃহবধূ থানায় অভিযোগ পর্যন্ত দিতে পারছেন না বলেও উঠেছে অভিযোগ। এবার দিয়ে পরপর আটবার নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বামীর সংসার করছেন গৃহবধূ খাদিজা।
এ ঘটনায় ওই এলাকায় দেখা দিয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ, সেই সাথে শ্বশুর ও স্বামীর শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। দিবাগত রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে কথা বলা হয় গৃহবধূ খাদিজার সাথে- তিনি তেমন কথা বলতে পারছিলেন না। শুধু হাওমাও করে কাঁদছে আর কাঁদছে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় কে মেরেছে কেন মেরেছে। তিনি সকালের সময়কে জানান ,আমার শ্বশুর। সে আমার ঘরে ঢুকে আমার গলা চেপে হত্যার চেষ্টা করেন। আমার মুখে কামড় মেরে দাত ভেঙে দিয়ে ঠোঁটের একাধিক জায়গা ক্ষত করেন। এমনকি পুত্র বধুর স্পর্শ কাতর জায়গায়ও কামড় দিয়ে মাথায় বেধড়ক কিল ঘুষি মারেন ও পুত্র বধুকে মাটিতে ফেলে তল পেটসহ সারা শরীরে পা দিয়ে লাথি মারে আর বলে সবাই মোরে তোর মরন হয় না কেন। এভাবে আট দশ বার নির্যাতন সহ্য করে সংসার করছি বলে জানায় পুত্রবধু।
তবে উপায় না পেয়ে ওই গৃহবধূ জীবন বাঁচাতে বাধাইড় ইউপির মেম্বার মুকুলের বাড়ির মুল গেটে চিৎকার দিয়ে পড়ে যান। এসময় মুকুল বাধ্য হয়ে মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উল্টো ওই গৃহবধূকে পাগলা গাড়োতে পাঠাতে বলেন পুলিশ । ইউপি সদস্য মুকুল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পরিস্থিতি খারাপ দেখে পুলিশ ফাঁড়িতে অবহিত করি। তার মুখ মন্ডল রক্তাক্ত অবস্থায় ছিল। এরপর শুনেছি গৃহবধূ মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গৃহবধূর ভাই ছিলেন হাসপাতালে। তিনি জানান, একজন স্বাভাবিক মানুষ এভাবে নির্যাতন করতে পারেন না। তাও স্বামী কামড় দিলে আলাদা ব্যাপার। কিন্তু শ্বশুর কিভাবে কামড় দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করতে পারেন । এরআগেও আমার বোনের দুটি বাচ্চা নষ্ট করেছে। আমরা অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিব। আমার বোনের ঘরে একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মাসুদ রানার সাথে যোগাযোগ করে গৃহবধূকে পাগল আখ্যায়িত করা হয়েছে কেন জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি অবহিত নয়, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।
জুমারপাড়া গিয়ে দেখা যায়, একই বাড়িতে থাকেন গৃহবধূ ও শ্বশুর শ্বাশুড়ি। তবে স্বামী রুমন আহমেদ বাড়িতে ছিলেন না। বাড়িতে ছিলেন শ্বশুর কচুয়া মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল কলেজের বাংলা বিষয়ের প্রভাষক কাউসার। তার কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি ঘরে শুয়ে আছি। এমন সময় রুমনের স্ত্রী গালমন্দ করে আমার ঘরে ঢুকে আমার মুখে ও হাতে কামড় দিয়েছে। আমি জীবন বাচাতে উল্টো কামড় দিয়ে নিজেকে রক্ষা করেছি।
আপনি কি আপন শ্বশুর জানতে চাইলে তিনি জানান, রুমনের বাবা মারা যাওয়ার পর তার মাকে বিয়ে করি। পুত্র বধু মানে নিজের মেয়ে আপনি কেন নির্যাতন করবেন জানতে চাইলে তিনি জানান, তার চরিত্র ভালো নয়। সে শুধু গালিগালাজ করে এসব কথা বলতেই আরেক প্রতিবেশি এসে গৃহবধূ সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলতে থাকেন। গৃহবধূর স্বামী রুমন আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব বিষয়ে কোন কথা না বলে সাক্ষাতে কথা হবে বলেে এড়য়ে চান।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: বিল্লাল হোসেন
www.e.bdprotidinkhabor.com
Copyright By MOHAMMAD ASIF