টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের আনারস চাষী ইসমাইল হোসেন ৩০ শতাংশ জমিতে তিনি আনারসের চাষ করেছেন। এতে তার ৪০/৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতি মধ্যে তার আনারস বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রচন্ড গরমে আনারসের চাহিদা থাকায় দামও পাচ্ছেন ভাল। তার দাবি, ৩০ শতাংশ জমির আনারস এক লাখ ২০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা বিক্রি হবে। এ ছাড়াও একই জমিতে হলুদ আধা ও কচুর চাষ করেছিলেন। সেখান থেকেও ভাল মুনাফা পেয়েছেন।
ইসমাইল হোসেন বলেন, ঈদ ও প্রচন্ড গরমে আনারসের চাহিদা বেড়েছে ব্যাপক। এতে প্রতিটি আনারস ৪৫/৫০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। ভাল দাম পেয়ে আমি খুব খুশি। শুধু ইসমাইল হোসেন নয়, চলতি মৌসুমে টাঙ্গাইলের মধুপুর গড় অঞ্চলে আনারসের ভাল ফলন ও দাম ভাল পাওয়ায় খুশি চাষীরা। এসব আনারস দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, এবার উপজেলায় আনারসের চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৫৫ একর জমিতে, যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার ৭২৯ একর বেশি। উপজেলা ছাড়াও গড় এলাকার ঘাটাইল, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও মুক্তাগাছা এবং জামালপুর সদর উপজেলা এলাকায় আরও সাত হাজার একর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে।
আনারসের জমিতে আধা, হলুদ, কলা, কচু ও পেপে, যে কোন তিনটি ফসল চাষ করা যায়। এসব আনারস মধুপুরের গারো বাজার ও জলছত্র পাইকারি হাটে বিক্রি করা হয়। জুন মাসের শেষ দিকে আনারস উঠতে শুরু করে। চলে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত।
জলছত্র হাটে সরেজমিন দেখা যায়, পাহাড়ি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার বাগান থেকে চাষি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সাইকেল, ভ্যানযোগে আনারস নিয়ে আসছেন পাইকারি হাটে। ব্যবসায়ীরা তাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে ট্রাকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন।
আনারস চাষী ওমর ফারুক বলেন, এক বিঘা জমিতে তিন হাজার আনারসের চারা লাগিয়েছিলাম। প্রতিটির পিছনে ১৫ টাকা করে খরচ হলেও প্রতিটি ৪৬ থেকে ৫০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করতে পারছি। আমাদের কৃষি অফিস থেকে তেমন সহযোগিতা করে না। আমরা জঙ্গলে থাকি তো তাই কেউ খোঁজ রাখে না।
অপরজন খোকন মিয়া বলেন, আগে অতি বৃষ্টি, ভাইরাস ও মাটি দূষিত হওয়ার কারণে আনারস পঁচে নষ্ট হলেও এবার তেমনটি হয়নি। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন ভাল হয়েছে।
ময়মনসিংহের শিমতলী এলাকার পাইকারি ক্রেতা আতিকুর রহমান ও রফিকুল ইসলাম বলেন, বেশ কয়েক দিন যাবত প্রচন্ড গরম। এতে আনারসের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। তাই দামও অনেক বেশি। এক মাস আগেও যে আনারস ২৫/৩০ টাকা দিয়ে কিনতাম। বর্তমানে সেই আনারস ৪৫/৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ে। চাহিদা কমলে দাম কমে।
মধুপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল জানান, প্রচন্ড গরম ও ঈদকে কেন্দ্র করে আনারসের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। ভাল দাম পেয়ে খুশি চাষীরা।