কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় কুড়িগ্রামে ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। নদ-নদী তীরবর্তী এলাকা ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জেলার উলিপুর, ফুলবাড়ি,চিলমারী, রাজিবপুর,রৌমারী, রাজারহাট, নাগেশ্বরী ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় বন্যাকবলিত এলাকায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। বন্যার পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় চর ও দ্বীপচরগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যতঃ ভেঙে পড়েছে।
বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ার কারণে অধিকাংশ পরিবারের লোকজন তাদের ঘরের ভিতর উচু মাচাং তৈরি করে, আবার কেউ কেউ নৌকায় দিবা রাত কাটাচ্ছেন। এসব পরিবারের রান্নাবান্না করা এখন দুরুহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকা গুলোতে গবাদিপশু নিয়ে অনেক পরিবার চরম বিপাকে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা, যাত্রাপুর, পাঁচগাছী ইউনিয়ন, উলিপুর উপজেলার হাতিয়া,বুড়াবুড়ি, বেগমগঞ্জ, সাহেবের আলগা, থেতরাই ও বজরা ইউনিয়ন, চিলমারী উপজেলার চিলমারী, অষ্টমিরচর, নয়ারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কথা জানান। তাদের মতে এসব এলাকায় আনুমানিক ৫০ থেকে ৫৫ হাজার মানুষ কমবেশি বন্যা কবলিত হয়ে পানিবন্দি রয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ারচর, রলাকাটা, খেয়ার আলগা, বড়ুয়া ও মাঝিয়ালির চরের প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। উজান থেকে আসা ঢলের পানি ও অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় তাদের এলাকার নিম্নাঞ্চলের অনেক ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানরা জানান।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ধরলা নদীর সেতু পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপদসীমার সামান্য নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।আগামী ২৪ ঘন্টায় উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নদ-নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: বিল্লাল হোসেন
www.e.bdprotidinkhabor.com
Copyright By MOHAMMAD ASIF